ছবি: সংগৃহীত
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন থেকে গড়ে ওঠা জুলাই আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা এবার ভোটের ময়দানে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চান। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের সাফল্যের পর তাদের লক্ষ্য রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি, যা জনগণের আস্থা অর্জন এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা পরিবর্তনের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জানা গেছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে এই দল, যা প্রচলিত রাজনীতির ধারা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। তাদের মূল লক্ষ্য হবে ক্ষমতার জন্য নয়, বরং দেশের কল্যাণসাধনে কাজ করা।
নতুন এ দলের সম্ভাব্য কাঠামো এবং লক্ষ্য নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী জানান, এটি হবে সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকের। সেখানে সাংবিধানিক ফ্যাসিবাদ, টেন্ডারবাজি বা চাঁদাবাজির মতো সমস্যা থাকবেনা। পাশাপাশি কোনো বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথে তারা হাঁটবে না।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সারজিস আলম বলেন, নতুন দলটি জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য কাজ করবে। তারা কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং কাজের মাধ্যমে নিজেদের প্রমাণ করবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, দেশের মানুষ যদি চায়, তবে তাদের রাজনৈতিক দল গঠন করা উচিত। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এতে যুক্ত হবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, “আমরা গণহত্যার বিচারসহ জনগণের কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য ক্ষমতা নয়, বরং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।” অর্থের উৎস সম্পর্কে তিনি জানান, ক্রাউডফান্ডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনা করা হচ্ছে এবং এ বিষয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফোরামের সাহায্য নেওয়া হবে।
নতুন দলের সম্ভাব্য নাম নিয়ে জনমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ছাত্রনেতারা। তবে ‘জনশক্তি’ নামে একটি দলের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে আলোচনা চলছে, তার সঙ্গে জাতীয় নাগরিক কমিটির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, এ ধরনের বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বন্ধ করতে হবে। এখনো নতুন দল গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক, নিজেদের বিপ্লবী চেতনা ধরে রাখার অঙ্গীকার করেছেন ছাত্রনেতারা। পাশাপাশি তারা রাজনৈতিক জোট গঠনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
এম.কে.