ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

পাঠ্যপুস্তকের ’মেয়ে’ গল্প নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আসিফ মাহতাব

প্রকাশিত: ২০:৫১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

পাঠ্যপুস্তকের ’মেয়ে’ গল্প নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আসিফ মাহতাব

ইসলামিক কালচারাল ফোরাম বাংলাদেশ কর্তৃক আয়েজিত “বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ভাবনা” শীর্ষক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন সদ্য চাকুরিচ্যুত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন শিক্ষক আসিফ মাহতাব। তিনি তাঁর এই আলোচনায় ২০২৫ সালের নবম শ্রেণীর পাঠ্যপুস্তকে 'মেয়ে' গল্প নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন। 

তিনি বক্তব্যের শুরুতে বলেন,“যখন আমি এটা জানতে পারি মানসিকভাবে একটু আহত হই,এটার জন্য কি আমি জেল খেটেছি,মার খেয়েছি।আমি কখনো খারাপ ভাষা ব্যবহার করি নাই,কোনো সময় কোনো বাজে শব্দ ব্যবহার করি নাই ,আমার পরিবার আমাকে এই শিক্ষা দেইনি । কিন্তু আজকে আমি জীবনের প্রথমবার খারাপ শব্দ ব্যবহার করছি  কারণ আমাদের এই সরকার পাঠ্যপুস্তক বই সংস্কারে একটি কমিটি করেছে । এই কমিটি একটি গল্প সংযোজন করতে যাচ্ছে। গল্পটির নাম ‘মেয়ে’। এই গল্পে মা তার মেয়েকে বলছে, ‘রবিবারে ভালোভাবে হেঁটে যাবে, যাতে করে তুমি যে খারাপ না, সেটা হতে চাও ,তুমি যেন সেটা না হতে পারো।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“এই গল্পটা আমাদের সাহিত্য বা ক্লাস নাইনের বইয়ে থাকাটা কতটা প্রয়োজন? আমরা আন্দোলন করেছি ইসলামের জন্য ,আমাদের সংস্কৃতিতে ইসলামের যে মূল্যবোধ সে বিষয়টি যাতে থাকে। আমাদের নবী করিম (সা:) এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করে কোনো গল্প বা এই শিক্ষা আমাদের দিয়েছিল? কুরআনে কি এই ধরনের শব্দ আছে? এই গল্পের আরেক জায়গায় মা তার মেয়েকে বলছে ‘এই ঔষধটা এমনভাবে বানাতে হবে যে কারণে বাচ্চা সৃষ্টির হওয়ার আগে তোমরা ফেলে দিতে পারো’-এই গল্প তারা ২০২৫ এ নিয়ে এসেছে, এইজন্য আবু সাঈদ শহীদ হয়েছে? 

আমরা কি চেষ্টা করেছি প্রতিটি কমিটিতে একজন আলেম রাখার জন্য? শুধুমাত্র দাবি তুললে হবে না , আন্দোলন তো আমরাই করেছি,আমাদের এখানে স্টেকহোল্ডার আছে। এই বইটি এখনো প্রকাশ হয়নি , এখনো পরিবর্তন করার সময় আছে , আমি চাই আপনারা একটু চিন্তা করেন আমাদের সংস্কৃতির সাথে এই ধরনের  গল্প যায় কি না ।

একজন শিক্ষককে শ্রেণীকক্ষে কমবয়সী বাচ্চারা জিজ্ঞাসা করবে  “স্ল্যাট” কথাটার মানে কি? ‘খা*ন*কী’মানে কি ? শিক্ষক-শিক্ষার্খীরা কি এই বিষয়ে আলোচনা করবে? এটা কি দরকার? তাহলে কেন এটাকে অর্ন্তভুক্ত করা হলো ।  আসলে আমাদের সংস্কৃতিটা কি?”

তিনিস আরো বলেন,“আমাদের এই আন্দোলনে সব মতাদর্শের মানুষ আন্দোলন করেছে ,অধিকাংশ মানুষ শহীদ হয়েছে ,কেউ বালহালায় যাওয়ার জন্য এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি,শহীদ হওয়ার জন্য আসছে, তাদের চিন্তাধারা ছিল ইসলামিক, এই ইসলাম কথাটা যে আন্দোলনের সাথে জড়িত এই কথাটা কিছু মানুষ আস্তে আস্তে  মুছে দিতে চাই । আমি এই আন্দোলনে ছিলাম ,নেতৃত্ব দিয়েছি ,আমি ইসলামের জন্য করেছি, বালহালায় যাওয়ার জন্য নয়। আমাদের যে ইসলামিক মূল্যবোধ রয়েছে সেটি ফেলে দিয়ে ‘স্পিরিট অব আগস্ট মুভমেন্ট’নামে কথিত নব্য মুক্তিযোদ্ধার চেতনা প্রবেশ করানো হচ্ছে। আমার জন্য চেতনা একটাই সেটি হচ্ছে ইসলাম ।”

“এই সংস্কৃতি কি আমরা চেয়েছি? এটা আপনারা একটু চিন্তা করেন,ভাবেন। এখনো সময় আছে ছাপানো হয়নি , আমরা আশা করি এই গল্পটা যাতে বইয়ে না থাকে। এখন এমন গল্প আরো আছে কিনা তা তিনি খতিয়ে দেখতে বলেন। এই সরকারের স্বচ্ছতা নেই , কী কী গল্প তারা দিয়েছে, কী পরিবর্তন করছে, সেটা জনগণের কাছে আগে পরিষ্কার করা উচিত। সংবিধান কি পরিবর্তন করছে সেটা পরিষ্কার করতে হবে।তারা সব গোপনে করছে, কেন!গোপনীয়তা কেন?

এইটা তো ফাঁস করেছে ,আমাদের ফাঁস করা লাগবে কেন ,আমাদের সব জানার কথা, বর্তমান সরকার কি কাজ করছে? আমি যখন এসব কিছু জানতে পারি তখন মানসিকভাবে একটু আহত হয়।”

মহি

×