শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে গড়া আওয়ামী লীগ দলটি ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশের শাসনভার ধরে রাখে। এ সময় শেখ পরিবারের সদস্যদের বাড়িগুলো দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে ছিল মুখর। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। এসব বাড়িতে এখন নেমে এসেছে সুনসান নীরবতা।
রাজধানীর ধানমণ্ডির লেকপারের সুধাসদন ছিল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম ঠিকানা। বাড়িটি বিশেষ নিরাপত্তার আওতায় ছিল। বাড়ির সামনের সড়কে চলাচল সীমিত ছিল, এবং একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বাড়ির উল্টো পাশে স্থাপিত ছিল।
তবে ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িটিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। সেখান থেকে বিভিন্ন সামগ্রীও লুট করা হয়। বর্তমানে বাড়িটির সামনে কোন নিরাপত্তাব্যবস্থা নেই এবং এটি সম্পূর্ণ ফাঁকা অবস্থায় পড়ে আছে।
শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা গুলশানে দেড় বিঘা আয়তনের বাড়িতে থাকতেন, যা ২০০৯ সালে সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ পেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিশেষ নিরাপত্তা আইন বাতিল হওয়ায় বর্তমানে এই বাড়ির মালিক রাষ্ট্রপক্ষ।
অতীতে বাড়িটি কয়েক স্তরের নিরাপত্তায় ঘেরা ছিল। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর সেখানে হামলা চালিয়ে সম্পদ তছনছ করা হয়। এখন বাড়িটির ফটকে তালা ঝুলছে এবং এর সামনে জমে আছে ঝরাপাতা। ভেতরে দীর্ঘদিন ধরে কারও থাকার চিহ্ন নেই।
বনানীতে বসবাস করতেন শেখ পরিবারের আরেক সদস্য শেখ সেলিম। অভ্যুত্থানের পর এই বাড়িতেও হামলা চালানো হয়। পাশের বাড়ির দারোয়ান জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে বাড়িটি খালি পড়ে আছে। সাম্প্রতিক সময়ে ময়লা-আবর্জনা সরানো হলেও বাড়ির ভেতরে কারও থাকার চিহ্ন মেলেনি।
ক্ষমতা হারানোর পর শেখ পরিবারের বাড়িগুলোতে এখন আর নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি নেই। একসময় যে বাড়িগুলো জনসমাগমে মুখর ছিল, সেগুলো এখন কেবল নির্জনতার সাক্ষী।
রাসেল