জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান
রাজনীতির নামে নিজেদের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত ব্যক্তিদের রাজনীতি ছাড়তে বললেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান। শেখ হাসিনার আমলে জামায়াতে আমির ডা. শফিকুর রহমানকে আয়নাঘরে রাখা হয়েছিলো বলে তিনি দাবি করেন।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে এগ্রিকালচারিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় কৃষিবিদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আপনাদের থেকে প্রায়ই আয়নঘরের বর্ণনা শুনি। স্বৈরাচার সরকারের সময়ে আমাকেও আয়না ঘরে রাখা হয়েছিল। যদিও সে সময়টা খুব বেশি ছিল না, মাত্র দুই ঘণ্টা সেখানে রাখা হয়েছিল। যাদেরকে গুম করা হয়েছিল তাদের অনেকের সঙ্গেই সেখানে আমার দেখা ও কথা হয়েছে। তাদের অনেকেই জানে না তাদের পরিবার-স্বজন কেউ বেঁচে আছেন কি না। এমনকি তারাও যে বেঁচে আছে, সেটিও তাদের পরিবার জানেন কি না তারা বলতে পারেন না। আওয়ামী লীগ যুদ্ধ অপরাধের নামে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করেছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে যে-সব অভিযোগ দিয়ে তা করা হয়েছে, সেগুলো ছিল শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মিথ্যাচার। আমরা আশা করি জাতির সামনে সেগুলো একদিন উন্মোচন হবে।
তিনি বলেন, রাজনীতি করার জন্য রাজকীয় মন দরকার, ভিখারির মন নয়। রাজনীতি করতে গিয়ে নোংরা চিন্তা যারা করেন তাদেরকে রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। চব্বিশের নতুন বাংলাদেশে তরুণ ছাত্র-জনতা আপনাদের আর চায় না
জামায়াত আমির বলেন, স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেকেই নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে বলবো আপনারা উচিত রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসা। আপনাদের আর দেশের যুবসমাজ চায় না।
তিনি বলেন, এতদিন বেলুন তৈরি করে জাতিকে পাহাড়-পর্বত বুঝানো হয়েছিলো। উন্নয়নের রোল মডেলের কথা বলে জাতিকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। সোনার বাংলাদেশ গড়ার নামে দেশটাকে শ্মশানে পরিণত করেছিলো। খুন-গুমের চারণ ভূমিতে পরিণত হয়েছিল দেশ। তাদের হাবভাবে মনে হয়েছিল তারা দেশের জমিদার আমরা ভাড়াটিয়া। যখন তখন, যাকে ইচ্ছে গুম-খুন করা হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ দেশে মেধার জেনোসাইড করা হয়েছে। সন্ত্রাসীদেরকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা হয়েছে। এ দেশকে খুন-গুম-ধর্ষণের চারণভূমিতে পরিণত করা হয়েছিল। যখন তখন যাকে তাকে খুন-গুম করা হয়েছে। দেশটাকে কবরস্থানে চিরনিদ্রায় পরিণত করা হয়েছিল। কেউ কাঁদতেও পারেনি।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এগ্রিকালচারিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশের মহাসচিব কৃষিবিদি মুহাম্মদ মাসউদ, সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট কৃষি বিজ্ঞানী ড. মোশাররফ হোসেনসহ আরও অনেকে।
ইসরাত