ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫ পৌষ ১৪৩১

দাবি না মানলে জানুয়ারি থেকে দেশের সকল পোল্ট্রি খামার বন্ধের ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২০:০১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দাবি না মানলে জানুয়ারি থেকে দেশের সকল পোল্ট্রি খামার বন্ধের ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

পোল্ট্রি শিল্পের অস্থিরতা নিরসনে এবং বাজারে মাংস ও ডিমের দাম কমাতে এ শিল্পে বিদ্যমান সিন্ডিকেটমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন প্রান্তিক পোল্ট্রি খামারিরা। সেই সাথে পোল্ট্রি ফিডের দাম কমানোসহ চার দফা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন তারা। এসব দাবি মানা না হলে আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সকল পোল্ট্রি খামার বন্ধ করার ঘোষণা দেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ ঘোষণা দেন সংগঠণের নেতৃবৃন্দ। সভায় সংগঠনের গাজীপুর জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

প্রান্তিক খামারি মোঃ সিরাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রান্তিক পোল্ট্রি শিল্প রক্ষা এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ মফিজুল ইসলাম মল্লিক। সংগঠনের সহ-সভাপতি  মোঃ শাহিনুর ইসলামসহ প্রান্তিক খামারিরা বক্তব্য রাখেন।
খামারিরা জানান, একটি মুরগির বাচ্চা উৎপাদন করতে হ্যাচারী মালিকদের সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ২০ টাকার মত খরচ হয়। অথচ এ মুরগির বাচ্চা খামারীদের কিনতে হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা দিয়ে। ক্ষেত্র বিশেষে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দিয়েও বাচ্চা পাওয়া যায় না। এখানে প্রতিটি মুরগির বাচ্চা থেকে হ্যাচারি মালিকরা বিপুল টাকা আয় করে থাকে। অতিরিক্ত লাভ না করে যদি সহনীয় মাত্রায় হ্যাচারি মালিকরা মুরগির বাচ্চা বিক্রি করতেন তাহলে খামারীরা আরও বেশি লাভবান হতে পারত। অন্যদিকে বাচ্চা ও খাদ্য উৎপাদনকারী কর্পোরেট কোম্পানিগুলি এ ব্যবসার পাশাপাশি মুরগি ও ডিম উৎপাদন করে, যা আইন পরিপন্থী। ফলে তারা খুব সহজেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে নিজেদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি করে থাকে। তাই হ্যাচারি এবং ফিড উৎপাদনকারী কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে মুরগি এবং ডিম উৎপাদন থেকে বিরত রাখতে হবে। তারা আরো জানান, পোল্ট্রি ফিডের প্রধান উপাদান ভুট্টার দাম কমলেও খাবারের দাম কখনো কমানো হয় না।

অন্যদিকে ঢাকার কাপ্তানবাজার ও কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন আড়তের ডিম ব্যবসায়ীরা আগের দিন রাতে ডিমের দাম নির্ধারণ করে থাকে। খামারিরা বলেন, ডিম উৎপাদন করে খামারের মালিকরা, অথচ তার দাম নির্ধারণ করে ডিম ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সদস্যরা। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং খামারিদের জন্য বেদনাদায়ক। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া দরকার।

অনুষ্ঠানে প্রান্তিক খামারীরা চার দফা দাবি পেশ করেন। এ দাবিগুলো হচ্ছে, ব্রয়লার মুরগির খাদ্যের ৫০ কেজির বস্তার  দাম ২০০০ থেকে ২১০০ টাকার মধ্যে এবং লেয়ার সোনালী মুরগির খাদ্যের দাম ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকার মধ্যে আনতে হবে এবং খাবারের মান উন্নত করতে হবে, সকল প্রকার মুরগির বাচ্চার দাম ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে আনতে হবে, মুরগির খাদ্য ও বাচ্চা উৎপাদনকারী কর্পোরেট কোম্পানি রেডি মুরগি ও ডিম উৎপাদন বন্ধ করতে হবে, প্রতি উপজেলায় ৩০০ জন ব্রয়লার, লেয়ার ও সোনালী সহ সকল প্রকার মুরগির খামারিকে কমপক্ষে তিন লক্ষ টাকার সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণ দিতে হবে। এসব দাবি পূরণ না হলে সারা দেশের সকল খামারের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হবে বলে জানান তারা।

আলোচনা সভা শেষে মোঃ সিরাজ উদ্দিনকে সভাপতি ও আবুল কালাম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ৯ সদস্য বিশিষ্ট সংগঠণের গাজীপুর জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠণ করা হয়। এ কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে ৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

নাহিদা

×