নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেয়া বক্তব্য ‘অস্পষ্ট এবং হতাশাজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত ১৬ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনের ওপরে বৃহস্পতিবার সকালে গুলশানে চেয়া্রপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই হতাশা ব্যক্ত করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘প্রধান উপদেষ্টার ভাষনে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। আমি মনে করি যে, এখন ইলেকশন কমিশন গঠন হয়ে গেছে.. ইলেকশন পরিচালনা করবার, কনডাক্ট করবার জন্য তার প্রস্তুতি নেবার জন্য সেই ধরনের কোনো প্রোভলেম নাই। অতি দ্রুত সেটা করা সম্ভব।
‘‘ আমরা যেটা আশা করেছিলাম যে… চিফ এডভাইজার সুনির্দিষ্ট একটা সময়ের মধ্যে তার রোড ম্যাপ দিয়ে দেবেন …সেটা তিনি দেননি। এটা আমাদেরকে কিছুটা হতাশ করেছে এবং একই সঙ্গে জাতিকেও কিছুটা হতাশ করেছে...।”
‘বুঝতে পারছি না, কোনটা সঠিক’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ চিফ এডভাইভার বলেছেন যে, ২৫ সালের শেষের দিকে অথবা ২৬ সালের প্রথম দিকে নির্বাচন হবে। তারপরে তার(প্রধান উপদেষ্টা) প্রেস সচিব বলেছেন, যে ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে…. তার(প্রেস সচিব)একথা আবার সাংঘর্ষিক কথা হয়ে গেছে।”
‘‘ এক্সজেক্টলি আমরা বুঝতে পারছি না যে, কোনটা সঠিক।”
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ই্উনুস যে সময়ের কথা বলছেন এটাতে কি মনে হচ্ছে যে, সময়ক্ষেপন করছে কিংবা বিষয়টা আপনাদের কাছে যৌক্তিক মনে হচ্ছে না… সাংবাদিকদের এরকম প্রশ্নের জবা্বে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ যৌক্তিক তো মনে হয়নি। আমরা বলেছি তো এটাতে আমরা হতাশ হয়েছি।”
বুধবার রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যা্ন তারেক রহমানের সভাপতিত্বে দলের স্থায়ী কমিটির যে বৈঠক হয়েছে তার সিদ্ধান্ত জানাতে সকাল বিএনপি মহাসচিব এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
‘বিএনপি: প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ স্থায়ী কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সভা মনে করেন যে, প্রধান উপদেষ্টার ভাষনে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তার বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সাম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয়নি… তিনি নির্বাচনের সাম্ভাব্য সময় সীমা ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশ অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন… আবার তার প্রেস সচিব যে কথা বলেছেন, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এটা পরস্পর বিরোধী।”
‘‘ এই ধরনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আরও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। স্থায়ী কমিটি মনে করে যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে গেছে, সেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগন এই বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছ হতে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে। সভা মনে করে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
আর কে