ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫ পৌষ ১৪৩১

যে কারণে হাসিনার চোখের কাটা হয়েছিলেন মাইকেল চাকমা

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

যে কারণে হাসিনার চোখের কাটা হয়েছিলেন মাইকেল চাকমা

ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে নিখোঁজ হন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট ইউপিডিএফের সংগঠক মাইকেল চাকমা। ওই সময় দেশজুড়ে আলোচিত ঘটনার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। ৫ বছর ৪ মাস পর সেই মাইকেলই জীবিত অবস্থাতেই স্বজনের মাঝে ফিরে আসেন। কোথায় কেমন ছিলেন তিনি?

 

তাদের যে জায়গায় রাখা হয়েছিল সেই জায়গাটি ‘আয়নাঘর’ নামেই বহুলভাবে পরিচিত। সেখানে তিনি তার দুর্বিষহ সময়ের বর্ণনা করেন। তিনি জানান, তাকে তুলে নেয়ার পর যে চোখ বাঁধা হয়েছিল এরপর ৫ বছর ৪ মাসে কোনো আলো দেখতে পাননি। প্রায় দেড় মাস শুধু ভাত খেয়ে সময় কাটিয়েছেন। আর যে তরকারি দেয়া হতো তাতে অনেক ঝাল দেয়া হতো।যদি ঝাল কমিয়ে দিতে বলা হতো তাহলে আরও বেশি ঝাল দেয়া হতো বলেও জানান তিনি।

 

তিনি জানান, ২০১৩ সালে খাগড়াছড়িতে শেখ হাসিনা সমাবেশে গিয়েছিলেন, ওইদিনই সেখানে অবরোধ থাকায় সমাবেশ ২ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ৪ টায় শুরু হয়। সেদিন সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা অবরোধ দিয়েছে তাদেরকে তিনি দেখে নিবেন। আয়না ঘরে গুম হওয়ার ব্যাপারে প্রধান আসামি হিসেবে তিন শেখ হাসিনাকেই দায়ি করেন।

 

আয়নাঘরের সেলগুলোর বর্নণা দিতে গিয়ে মাইকেল চাকমা জানান, ওখানের যে কক্ষগুলো রয়েছে সেখানে বাইরের কোনো আলো ঢুকে না। বড় মোটরের ফ্যান অন করে রাখা হতো। আর সেখান থেকে অনেক আওয়াজ হতো। শব্দে  ‍ঘুমানো যেতো না। আর ঘুমিয়ে থাকলেও দরজায় আওয়াজ করে জাগিয়ে দেয়া হতো বলেও জানান মাইকেল।

তার মতো আরও অনেকের সাথেই গোপন বন্দীশালায় দেখা হয়েছিল মাইকেলের। এ বিষয়ে তিনি জানান, বন্দী থাকার কিছুদিন পর তাকে অন্য একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

যেদিন মুক্তি পান তিনি সেদিনও জানতেন না যে তিনি পরিবাররের কাছে ফিরছেন। এ বিষয়ে মাইকেল বলেন, লুঙ্গি, গেঞ্জি পড়া অবস্থায়ই তাকে একটি গাড়িতে তোলা হয়। তখন সেখান থেকে একজন তাকে জিজ্ঞেস করেছিল সে নাস্তা করেছে কিনা। সে তখন বলেছিল আমি নাস্তা করিনি। তখন একজন তাকে বলেছিল তোমাকে ছেড়ে দেয়া হবে বাসায় গিয়ে পরিবারের সাথে দুপুরের খাবার খেয়ে নিও।

মাইকেল চাকমা আরও জানান, গাড়িতে করে তাকে একটা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সে বুঝতে পেরেছিলো এটি পাহাড়ি এলাকা। একপর্যায়ে তাকে গাড়ি থেকে নামানো হয়। তাকে বলা হলো রাস্তার একপাশে শুয়ে পড়তে এবং আধা ঘণ্টার আগে উঠার চেষ্টা না করতে। আর যদি উঠে তাকে গুলি করা হবে বলেও হুমকি দেয়া হয়। গাড়িটি চলে গেলে হাত খুলে উঠে বাড়িতে চলে যেতে বলা হয়।

তাবিব

×