ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।
গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে দেওয়া কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে গুমের ঘটনায় জড়িতদের বিচারিক প্রক্রিয়া শুরুসহ র্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে কমিশন।
সম্প্রতি গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান লিটন গনমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আয়না ঘরের মাটির নিচে গুহাও রয়েছে,যেটি তদন্তে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, বন্দীকে সেখানে বেঁধে রেখে ইলেক্ট্রিক চেয়ারে বসিয়ে জোরে ঘোরানা হতো। আয়না ঘরে মানুষকে কিভাবে নির্যাতন করা হতো সেগুলোর বর্ণনা দেন তিনি।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গুমের ঘটনায় নির্দেশদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে কমিশন। এ ছাড়া হাসিনা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার গুমের ঘটনায় সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। যাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশ কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।’
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশত্যাগ করেন। এর পরপর মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে তাঁকে জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত একাধিক হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
গুম-সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন গত শনিবার বিকেল পাঁচটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে ‘আনফোল্ডিং দ্য ট্রুথ’ শিরোনামে অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনটি জমা দেয়। তাতে বলা হয়, গুমের ঘটনায় কমিশনে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৬৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৫৮ জনের অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনাগুলো তদন্ত করতে অন্তর্বর্তী সরকার গত ২৭ আগস্ট এই কমিশন গঠন করে। কমিশনে র্যাব, ডিজিএফআই, ডিবি, সিটিটিসি, সিআইডি, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে।
তাবিব