ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

দিনক্ষণ ঠিক করবে ইসি ॥ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব

২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যেই নির্বাচন

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪২, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যেই নির্বাচন

২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ রয়েছে উল্লেখ করে তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘আপনারা আশা করতে পারেন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।’ 
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ।
বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে, এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচনী রোডম্যাপ খুব স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যদি সংস্কার হয় তাহলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে বলে প্রধান উপদেষ্টা আলোকপাত করেছেন। চূড়ান্ত তারিখ কি? সেটা নির্ভর করবে সংস্কারের ওপর। তিনি একটা সময় দিয়ে দিয়েছেন। এর চেয়ে পরিষ্কার রোডম্যাপ কি হতে পারে? আপনি আশা করতে পারেন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এখন আপনি যদি বলেন মনোনয়ন দাখিলের সময় কবে? সেটা নির্বাচন কমিশন দেবে। 
প্রেস সচিব বলেন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের হত্যাকাণ্ডে যারাই জড়িত, যাদের হাতে রক্ত আছে। তাদের বিচার হবেই। এখানে কোনো মাফ নেই। যারা গুমে জড়িত ছিলেন তারা রাজনৈতিক দল হোক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হলেও বিচার হবেই। এইটুকু নিশ্চিত থাকতে পারেন।
আওয়ামী লীগের নেতা ও অভিযুক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেশত্যাগের অভিযোগের বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। অনেকগুলো বিষয় জানতেও পেরেছি। ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশে ছিলেন কি ছিলেন না, সেই প্রমাণ সরকারের হাতে নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আমাদের অনেকগুলো পরিকল্পনা আছে। কিন্তু আমার কথা হলো আমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারব। আমার সময় তো আসীন নয়। আমি একটা কাজ হাতে নিলাম, কিন্তু করতে পারলাম না। সেটা ঠিক না। সেক্ষেত্রে আমরা প্রত্যেকটা জিনিস আমরা দেখছি। আমরা কতটুকু করতে পারব সে অনুযায়ী কাজ করছি। যে জায়গাগুলোতে আমরা মানসম্মত পরিবর্তন আসবে সেই জায়গাগুলোতে আমরা বেশি নজর দিচ্ছি।
নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ, কবে মনোনয়ন দাখিল হবে, এগুলো নির্বাচন কমিশনের কাজ। সরকারের কাজ হচ্ছে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করা। নির্বাচনটা যাতে সুষ্ঠু হয় এ জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের জাতীয় দাবি আছে রাজনৈতিক দল ও মানুষের পক্ষ থেকে। জুলাই বিপ্লবের চেতনা হচ্ছে, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে। মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ভোট দিতে পারেনি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে তরুণদের দাবি, তারা যেন ভোট দিতে পারে, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত যেন হয়। 
সংস্কার কমিশনগুলো দ্রুত প্রতিবেদন দেবে বলে আশা প্রকাশ করে আজাদ মজুমদার বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের ভিত্তিতে জাতীয় উদ্যোগের চেষ্টা হবে। জাতীয় ঐকমত্যে সংস্কারের বিষয়গুলো তৈরি হয়ে গেলে নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিতে পারবে। নির্বাচনের প্রস্তুতির কাজ কমিশন শুরু করে দিয়েছে।  
তিনি বলেন, নির্বাচনের চূড়ান্ত দিনক্ষণ জানতে হলে সবার উচিত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা। মোটাদাগে সরকার নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমার কথা বলেছে। এ সময়ের মধ্যে থেকে নির্বাচন আয়োজন করতে গেলে যে যে প্রয়োজনীয়তার কথা ইতোমধ্যে আলোচিত হয়েছে। এখনো আলোচনা হচ্ছে বা সামনে যে ইস্যুগুলো আসবে সেগুলো নিয়ে সরকার কিভাবে কাজ করবে তার রূপরেখা, পদ্ধতির আউটলাইন প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেছেন। 
নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলাদা আলাদা বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার কাকে গুরুত্ব দেবে এমন প্রশ্নে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, সরকার সবাইকে গুরুত্ব দেবে। এখানে সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে জাতি যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। সেজন্য যেসব স্টেকহোল্ডার রয়েছে তাদের সবার মতামত নিয়ে একটা সম্মিলিতভাবে পৌঁছে জাতির জন্য কল্যাণ হয় সেরকম সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। 
জাতীয় ঐকমত্য হলে নির্বাচনের সময়সীমা বাড়বে কিনা এমন প্রশ্নে আজাদ মজুমদার বলেন, যখন পরিস্থিতি তৈরি হবে তখন দেখা যাবে। এ বিষয়ে এখন ধারণা জল্পনা-কল্পনার সময় হয়নি। 
আওয়ামী লীগের বিচার পরে নির্বাচন জাতীয় নাগরিক কমিটির এমন দাবি প্রসঙ্গে আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, জাতীয় ঐকমত্য গঠন কমিশনের আলোচনায় যদি রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব আসে কিংবা আদালত থেকে কোনো নির্দেশনা আসে। সব বিষয় বিবেচনা করে সরকার যদি মনে করে তাহলে সিদ্ধান্ত নেবে।

হুমায়ুন কবির

×