কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে দুঃখ প্রকাশ করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, যারা আমরা মুক্তিযোদ্ধা, বিশেষ অবদান রেখেছি তাদের তো অ্যাওয়ার্ড দেওয়া কথা! যারা রাজাকার, যারা পাকিস্তানের কাছে মুরগী বিক্রি করেছে তারাই অ্যাওয়ার্ড পায়। যারা পাকিস্তানিদের অন্যভাবে সাহায্য করেছে তারাই অ্যাওয়ার্ড পায়। কিন্তু আমাদের স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়নি।
কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের হাজারো স্মৃতি আছে। আমি যখন বিদ্রোহ করি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে, যদি আমাদের কোন ভুল হতো, তাহলে মেরে ফেলত পাকিস্তানিরা। ফাঁসির মঞ্চে লড়তে হতো। বিগত দিনে যারা সরকার ছিল। তারা তো যথাযথ সম্মান দেননি। শেখ মুজিব স্বাধীনতা ৭ তারিখ ঘোষণা করেছে। সে ভয় পেয়েছিল। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭০ সালে যখন নির্বাচন হয় তখন সেটা ছিল বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে; এটা কোনো রাজনৈতিক দলের মধ্যে ছিল না। যেহেতু সেই সময়ে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী দল ছিল আওয়ামী লীগ, মানুষ আওয়ামী লীগকে নিরঙ্কুশভাবে জয়ী করে।
অলি আহমদ বলেন, আমরা সময়ের অপেক্ষা ছিলাম। আমরা তো বিদ্রোহ করলে হবে না। সমগ্র জাতিকে বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমরা যখন দেখলাম বাঙালি জাতি পাকিস্তানের বিরুদ্দে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। এই সময়টা বেছে নিলাম। ২৫ মার্চ রাতে বাঙালিদের ওপর হামলা করল। ছাত্রদের হত্যা করল।
স্বাভাবিকভাবে শেখ মুজিবুর রহমান মনে করেছিলেন তাকেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী করা হবে এবং তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতেই আগ্রহী ছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা যারা সেনাবাহিনীতে ছিলাম, আমরা পাকিস্তানিদের ওপর নজর রাখছিলাম। আমরা দেখলাম প্রতিনিয়ত পাকিস্তান থেকে নতুন নতুন সেনাদল, অস্ত্র-গোলাবারুদ আসতে শুরু করেছে। অথচ ১৯৬৫ সালে আমি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি, তখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সম্পূর্ণ অরক্ষিত ছিল।
তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিব আমাদের ওপর আস্থা রাখতে পারেন নাই। তিনি পরিষ্কারভাবে বলেছিলেন, আমি এক ইয়াহিয়া খানের পরিবর্তে আরেক ইয়াহিয়া খানের ওপর দায়িত্ব দিতে পারি না। তিনবার তার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি, তিনবারই তিনি আমাদের একই জবাব দেন। পরবর্তী সময়ে আমরা দেখলাম, তিনি পাকিস্তানিদের সঙ্গে বৈঠক ঠিক করলেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।
তিন দিন তিনি বৈঠক করলেন এবং বৈঠক ফলপ্রসূ হলো না। এরপর তিনি বললেন, আগামীকাল থেকে হরতাল। এর আগে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ ছিল, তখন আমরা মনে করেছিলাম তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন। তবে তিনি স্বাধীনতার আশপাশেও ছিলেন না। পরবর্তী পর্যায়ে তিনি স্বদিচ্ছায় পাকিস্তানের কাছে আত্মসমর্পণ করে কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তান চলে যান।
এসআর