ছবি সংগৃহীত
কিশোরগঞ্জে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে মঞ্চে রেখেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া। এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী ঘরানার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাধান্য দিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়। আলোচনা সভায় আওয়ামী ঘরানার একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বক্তব্য দেন। বক্তব্য দেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবি ছিদ্দিক ও ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া। বক্তব্য শেষে ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। তবে মঞ্চে উপস্থিত জেলা প্রশাসকসহ কেউ এ ঘটনায় কোনো প্রতিবাদ জানাননি।
এ সময় বক্তব্যে ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া বলেন, একাত্তর আর ২৪-এর আগস্ট এক নয়। ৫ আগস্ট ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে। আর একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। পোস্টারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছবি দেওয়া যেত। একইসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কিছু কার্যক্রমের সমালোচনাও করেন তিনি ।
এদিকে জেলা প্রশাসককে মঞ্চে রেখে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়ার ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বমহলে।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুল আলম বলেন, একাত্তরে হয়েছিল বিপ্লব, আর ৫ আগস্ট হয়েছে গণঅভ্যুত্থান। গত ১৬ বছর এই অনুষ্ঠানে আমরা মন খুলে কথা বলতে পারিনি। নির্দেশনা দেওয়া থাকত, কী বলা যাবে আর কী বলা যাবে না।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক ভূঁইয়া বলেন, আজকে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডিসির উপস্থিতিতে সাবেক কমান্ডার ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া বক্তব্য শেষ করার সময় ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন। কিন্তু এ নিয়ে কেউ বাধা-প্রতিবাদ করেননি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, আমাদের একাত্তরের চেতনা ধারণ করতে হবে। একাত্তরের ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে।
‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগানে বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমি তো শুনিনি। আমি শুনতে পাইনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার মাহবুব আলম এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মিজানুর রহমান খান।
আশিকুর রহমান