ছবি: সংগৃহীত
১৯৭১ সালের ৯ মাসের ত্যাগ, রক্ত এবং অকল্পনীয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা একদিকে যেমন লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্নপূরণ করেছে, তেমনই ইতিহাসে রয়েছে ক্ষতির গল্প। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর আজও আলোচনা হয়—এ অর্জন কার লাভের এবং কার ক্ষতির কারণ হয়েছিল?
স্বাধীনতা অর্জনের সবচেয়ে বড় লাভ হলো একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম। বাঙালিরা নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি, এবং আত্মপরিচয়ের একটি স্বাধীন মঞ্চ পেয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশ বিশ্বের দরবারে একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নারীর ক্ষমতায়ন, এবং সামাজিক উন্নয়নে স্বাধীনতার ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে।
এ ছাড়া স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্যপদ পেয়ে বৈশ্বিক অঙ্গনে নিজের পরিচিতি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।
স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশে শুরু হয় রাজনৈতিক বিভাজন ও অভ্যন্তরীণ সংঘাত। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকে সরে যাওয়া, সামরিক শাসন, এবং ক্ষমতার রাজনীতি স্বাধীনতার চেতনায় আঘাত হেনেছে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। ভারতের জন্য এটি ছিল এক কৌশলগত বিজয়, কারণ পাকিস্তান ভেঙে তাদের একটি স্থায়ী মিত্র পেয়েছে।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের জন্য এটি ছিল এক ভয়াবহ ক্ষতি। তাদের ভূখণ্ড, জনসংখ্যা, এবং অর্থনৈতিক সম্পদের একটি বড় অংশ হারাতে হয়েছে।
বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের বিজয় দিবস এলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী, ক্যাবিনেট মন্ত্রী ও বিরোধী রাজনীতিকদের অনেকেই ‘বিজয় দিবস’কে স্মরণ করেছেন। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট (টুইট) করেন। তবে ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে করা সেই ভার্চুয়াল বার্তায় কোথাও দেখা যায় না বাংলাদেশের নাম। এমনকি মুক্তিবাহিনী, এদেশের মানুষের নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের গল্পও থাকে উপেক্ষিত।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ২৭ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে একটি পোস্ট করেন নরেন্দ্র মোদি। মোদি লেখেন, আজ বিজয় দিবসে আমরা ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়ে অবদান রাখা সাহসী সৈন্যদের সাহস ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাই। তাদের নিঃস্বার্থ উৎসর্গ ও অটল সংকল্প আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের গৌরব এনে দিয়েছে। এই দিনটি তাদের অসাধারণ বীরত্ব এবং তাদের অদম্য চেতনার প্রতি রইলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাদের আত্মত্যাগ চিরকাল প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে ও আমাদের জাতির ইতিহাসে গভীরভাবে গেঁথে থাকবে। ইতোমধ্যেই নরেন্দ্র মোদির করা পোস্ট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা চলছে।
তাবিব