ছবি: সংগৃহীত
ডিসেম্বর—বাংলাদেশের বিজয়ের মাস। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দিয়ে জন্ম নেয় এক স্বাধীন রাষ্ট্র। তবে বিজয়ের ৫৩ বছর পর প্রশ্ন উঠেছে, জাতি কি আসলেই বিজয়ের লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পেরেছে?
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন—একটি সাম্য, মানবাধিকার এবং সমৃদ্ধির বাংলাদেশ তা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়ে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের উদাহরণ। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, পোশাক খাতের সাফল্য, এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন এই অগ্রগতির সাক্ষী। তবে দারিদ্র্য, আয় বৈষম্য, এবং বেকারত্ব এখনো বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
অর্থনীতিতে আমরা উন্নতি করলেও তা সবার মধ্যে সুষমভাবে বণ্টন হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ, যা এখনো অধরা।
মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা। তবে স্বাধীনতার পর থেকে দেশে গণতন্ত্র বারবার হোঁচট খেয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, এবং দুর্নীতি মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নকে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে উন্নয়ন হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং মানবাধিকার রক্ষায় এখনও অনেকটা পথ বাকি। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মীয় উগ্রবাদ এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সেই চেতনায় আঘাত করেছে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামাজিক অঙ্গনে আরও ন্যায়বিচার ও সমতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিজয়ের মাস শুধু উদযাপনের নয়, এ সময় আত্মসমীক্ষারও।
বিজয়ের ৫৩তম বছরে এখনো মনে হয়—স্বপ্নের সোনার বাংলা আর কত দূরে?
তাবিব