ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২ পৌষ ১৪৩১

যত দূরে সরছে ভারত, তত কাছে আসছে পাকিস্তান!

প্রকাশিত: ১৯:১০, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

যত দূরে সরছে ভারত, তত কাছে আসছে পাকিস্তান!

১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের শাসন ও ভারতের প্রতি নতজানু পররাষ্ট্রনীতির ফলে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে ভারতের প্রতি ক্ষোভ বেড়েছিল, তবে তা প্রকাশের সুযোগ ছিল না। বাংলাদেশে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশটির রাজনৈতিক দৃশ্যপটে বড় পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার পর, ভারতীয় আধিপত্যের বিরোধিতা বৃদ্ধি পেয়ে, এক দিকে যেখানে ভারত থেকে দূরে সরে যাচ্ছে বাংলাদেশ, অন্য দিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, এমন মন্তব্য করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।

ঐতিহাসিকভাবে, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে শীতল অবস্থায় রয়েছে।ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি হয়েছে ফেলানি হত্যার বিচারহীনতা, সীমান্ত হত্যা, নদীর পানিবণ্টন, ট্রানজিট সমস্যা, সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টি, ভারসাম্যহীন বাণিজ্য এবং নানা চুক্তির কারণে। বিশেষ করে, শেখ হাসিনার পতনের পর তাকে ভারতে আশ্রয় দেওয়া এবং তার পক্ষে উস্কানিমূলক প্রচারণা, সংখ্যালঘু ইস্যু তৈরি, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ইত্যাদি ঘটনার পর দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে তীব্র অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের দাদাগিরি মনোভাবের কারণে বাংলাদেশ যতটা দূরে সরে যাচ্ছে, পাকিস্তান ততটাই কাছে আসছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং পাকিস্তানের রাজনীতি- সব জায়গাতেই তারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে উৎসাহ প্রকাশ করছে।

পাকিস্তান এদিকে শুধু কথা নয়, কাজে তা প্রমাণও করছে। পাকিস্তানি সংগীতশিল্পী আতিফ আসলাম সম্প্রতি বাংলাদেশে কনসার্টে গান গেয়েছেন, যেখানে তিনি দেড় ঘণ্টার পরিবর্তে প্রায় তিন ঘণ্টা গান পরিবেশন করেন। এর পাশাপাশি, পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালু, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা এবং প্রথমবারের মতো সরাসরি জাহাজে বাণিজ্য শুরু করেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে পাকিস্তান শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি, টেক্সটাইল, মেশিনারিজ এবং পর্যটন খাতে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী। এই খাতগুলোতে বাংলাদেশ অনেকাংশে ভারত নির্ভর, তাই দুই দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যে মতবিনিময়ের মাধ্যমে পুরোনো শত্রুতার মীমাংসা করে, পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উন্নত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

নাহিদা

×