পুলিশ কর্মকর্তারা। ছবিঃ সংগৃহীত।
ছাত্র- জনতার গণঅভ্যুত্থান দমাতে গিয়ে বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন পুলিশের বেশ কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা। আন্দোলনকারীদের হয়রানি, সমন্বয়কদের হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করা সহ নির্বিচারে গুলি করে শত- শত ছাত্র জনতা হত্যায় নির্দেশদাতা অভিযোগে বিতর্কিত এসব কর্মকর্তার নামে হয়েছে প্রায় ২৮০ টিরও বেশি মামলা।
আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বেশীরভাগ শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তা চলে গেসেন আত্মগোপনে। তবে, চার মাস পেরিয়ে গেলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন অভিযুক্তরা। কিন্তু কোথায় আছেন এক সময়ের আলোচিত-সমালোচিত সেই পুলিশ সদস্যরা!!
গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ভাতের হোটেল দিয়ে আলোচনায় আসেন সাবেক ডিআইজি হারুন। সরকারের বিশেষ আনুকূল্য পাওয়ার জন্য হারুনের নির্দেশেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র- আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে তুলে আনা হয়েছিলো বলেও জানা গেসে। ৫ আগস্ট জনতার ঢল গণভবনে ঢুকে পরলে আত্মরক্ষার জন্য তিনি দেয়াল টপকাতে গিয়ে গুরুতর আহত বলে গুঞ্জন উঠেছিলো।
একাধিক সূত্রে জানা গেসে, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে পুলিশ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দেশ ছেড়েছেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেসে, অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেসে ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান। ভারতের গোয়ায় একটি হোটেলে অবস্থান করছেন তিনি। তার সঙ্গে যুবলীগের সাবেক নেতা ইসমাঈল হোসেন সম্রাটকেও দেখা গেসে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পাচারকারীদের সহায়তায় অবৈধভাবে ভারতে পালিয়েছে ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। জানা যায়, ১০ সেপ্টেম্বর রাতে আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার ভারতে ঢুকেছেন। পাচারকারীদের এ সংক্রান্ত কয়েকটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় এ নিয়ে জেলা জুড়ে তুমুল আলোচনা ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়।
কোটা সংস্কার ঘিরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৫ কোটি টাকা আনার অভিযোগ সাবেক এসবি প্রধান মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ৬ অক্টোবর দেশ থেকে ভারতে পালিয়ে গেছে বলে খবর প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে তবে সেই খবরকে মিথ্যা দাবি করেন মনিরুল নিজেই। ১৪ অক্টোবর মনিরুল ইসলাম একটি টিভি চ্যানেলকে বলেন, তিনি দেশেই আছেন। এরপর থেকে নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেসে তাকে।
"গুলি করি, মরে একটা। আহত হয় একটা, একটাই যায় স্যার, বাকিটি যায়না।"
ভাইরাল সেই ভিডিওতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশেই দেখা গিয়েছিলো সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ্ আল মামুনকে।ছাত্র- জনতার আন্দোলনে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামুনকে গ্রেফতার করা হয় ৩ সেপ্টেম্বর।
সম্প্রতি এ মামলায় আদালতেও জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ঢাকায় শতাধিক হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা হয়েছে এবং এর মধ্যে ৫০ টির বেশি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছে একেএম শহিদুল হক, ডিবিডিসি মশিউর রহমান, ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফি ও যাত্রাবাড়ি থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান সহ বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচিত অন্তত ৭ সদস্য।
এছাড়াও কর্মস্থলে যাচ্ছেন না অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার নুরুন্নবী, অতিরিক্ত ডিআইজি এসএম মেহেদী হাসান ও অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জিত কুমার রায়। যাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে ও পরে সংগঠিত হতাহতের ঘটনায় একাধিক মামলা রয়েছে।
রিয়াদ