ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও প্রতিবেশী ভারতের প্রতি আমাদের পররাষ্ট্রনীতির নির্ভরশীলতা ও নতজানু মনোভাব নিয়ে সমালোচনা ক্রমাগত বাড়ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত না থাকার অভিযোগ উঠেছে।
ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহাসিক হলেও এতে ভারসাম্যের অভাব স্পষ্ট। সীমান্ত হত্যা থেকে শুরু করে তিস্তার পানিবণ্টন ইস্যু—প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এই আশ্বাসের কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
অন্যদিকে, ভারতের স্বার্থে বাংলাদেশ বারবার একতরফা সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। ট্রানজিট সুবিধা, বন্দর ব্যবহারের অধিকার, এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানিতে ভারতের সুবিধা নিশ্চিত হলেও, বাংলাদেশের নাগরিকরা প্রায়ই তাদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত।
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা কখনোই আত্মসম্মান ও জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নয়। বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্রনীতিকে কেন আরও শক্তিশালী ও স্বাধীনতার ভিত্তিতে সাজাতে পারছে না, সেটি এখন প্রধান প্রশ্ন।
প্রতিবেশীর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের পাশাপাশি সমতাভিত্তিক আচরণ নিশ্চিত করাও সমান জরুরি। তবে নতজানু নীতির কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সাধারণ জনগণের মধ্যে এই নীতির কারণে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। মানুষ আশা করে, দেশের নেতৃত্ব আরও শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করবে এবং জাতীয় স্বার্থকে সর্বাগ্রে রাখবে। কূটনৈতিক তৎপরতা যদি একতরফা হয়, তবে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি মানুষের আস্থা কমে যাওয়ার শঙ্কা থাকে।
সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক রাজনীতির আলোকে বাংলাদেশের উচিত একটি ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা। শক্তিশালী ও নির্ভীক নেতৃত্বই পারে দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে এবং জনগণের আত্মসম্মান বজায় রাখতে।
তাবিব