ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের টেলিভিশন চ্যানেল রিপাবলিক বাংলার অন্যতম পরিচিত মুখ ময়ুখ রঞ্জন ঘোষ। তার সংবাদ উপস্থাপনার অদ্ভুত এবং ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ ধরন নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনা ও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ময়ুখের সংবাদ পরিবেশনের ধরন অনেকেই একে মলম বিক্রেতাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ফলে তাকে নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সাংবাদিকতার নৈতিকতা এবং সত্যতা বজায় রাখার জায়গায় বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন ময়ূখরঞ্জন। অভিযোগ উঠেছে, তিনি সংবাদ উপস্থাপনের ক্ষেত্রে অতিরঞ্জন এবং ভুল তথ্যের আশ্রয় নিচ্ছেন, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। একাধিক ঘটনায় দেখা গেছে, তার উপস্থাপিত তথ্য পরবর্তীতে ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। তার এমন কার্যকলাপ শুধু সাংবাদিকতার মান ক্ষুণ্ণ করছে না, বরং গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের বিশ্বাসেও চিড় ধরাচ্ছে।
সম্প্রতি ময়ূখ রঞ্জনের নাম আবারও আলোচনায় আসে। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কয়েকটি ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছেন, যা পরবর্তীতে পুরোপুরি ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। এ ঘটনায় অনেকেই তার সাংবাদিকতার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যমের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরনের সাংবাদিকতা সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ায় এবং প্রকৃত ঘটনা থেকে মানুষের মনোযোগ সরিয়ে দেয়।
বাংলাদেশে রিপাবলিক বাংলা এবং ময়ুখ রঞ্জনের জনপ্রিয়তা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে তাকে শুধুমাত্র বিনোদনের উপকরণ হিসেবে দেখছেন। কেউ কেউ আবার তার সাংবাদিকতার প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করছেন। ময়ুখের এই অস্বাভাবিক কণ্ঠস্বর এবং চিৎকার-চেঁচামেচি অনেক দর্শকের কাছে অযাচিত এবং সংবাদের গুরুত্বকে ক্ষুণ্ণ করে বলে মনে করা হয়। কেউ কেউ তো তাকে ‘মৃগীরোগী’ বলেও উপহাস করেছেন। তবে এ ধরনের উপস্থাপনা কতটা কার্যকরী বা সাংবাদিকতার নৈতিকতার সাথে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে।
ময়ুখ রঞ্জন ঘোষের উপস্থাপনা দর্শকদের একাংশের কাছে বিনোদনমূলক হলেও, অনেকের মতে এটি সাংবাদিকতার প্রকৃত মান ও গুরুত্বকে ক্ষুণ্ণ করে। তার অস্বাভাবিক উপস্থাপনাশৈলী পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সংবাদজগতে একটি হাস্যকর নতুন ধারার সৃষ্টি করেছে।
সাংবাদিকতা পেশা সত্যতা ও নিরপেক্ষতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। ময়ুখ রঞ্জন ঘোষের মতো সাংবাদিকদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা হতে পারে। মানুষ সংবাদমাধ্যম থেকে সত্য জানতে চায়, মিথ্যার ফুলঝুরি নয়। রিপাবলিক টিভি এবং ময়ূখরঞ্জন যদি নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে না পারেন, তবে তাদের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা কমে যাওয়াটা সময়ের ব্যাপার।
তাবিব