ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে মাথাপিছু জিডিপিতে এগিয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২৩:২১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে মাথাপিছু জিডিপিতে এগিয়ে বাংলাদেশ

ছবিঃ সংগৃহীত।

বাংলাদেশের মানুষেরা ভারত ও পাকিস্তানের মানুষের চেয়ে গড়ে বেশি আয় করেন। আয়ের ক্ষেত্রে কয়েক বছর ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। অথচ দুই দশক আগেও ভারত ও পাকিস্তান বেশ এগিয়ে ছিল বাংলাদেশের চেয়ে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারী ও বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্থবির হলেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার একেবারে নেতিবাচক ধারায় যায়নি। প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তবে তা ছিল ধীরগতির। এদিকে জাতীয় মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে গত দুই যুগের ব্যবধানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। মাথাপিছু আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার থেকে।


বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।


প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনেক স্বল্প আয়ের দেশ ঋণ সংকটে পড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যে ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে তা উল্লে­খযোগ্য হারে কমে এসেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৪ শতাংশে নেমে আসে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তা আরও কমে ৩ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে যায়। পরবর্তী দুই বছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গতি অর্জন করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে ৭ দশমিক ১ শতাংশে দাড়ায়। কিন্তু ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার আবার ধীর হয়ে আসে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে পূর্ভাবাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

 

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৪ বছর ধরে ভারতের ওপরে বাংলাদেশ। মাথাপিছু জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ক্ষেত্রে টানা চার বছর ধরে ভারতের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। আইএমএফের সর্বশেষ হিসাবে, ২০২৩ সালে এসে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২১ ডলার। আর ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ২ হাজার ৬১২ ডলার।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বব্যাংক ৬৩টি দেশকে নিম্ন আয়ের হিসাবে শ্রেণিভুক্ত করেছিল। এরপর থেকে, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশসহ ৩৯টি দেশ মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় ওঠে আসে। যার অর্থ ২০২৩ সাল নাগাদ তাদের বার্ষিক মাথাপিছু আয় ১ হাজার ১৪৫ ডলারের উপরে ছিল। বাকি দেশগুলোর প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশিত হয়নি। প্রবৃদ্ধির হারে টেকসই হওয়ায় নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে মাত্র ৬টির ২০৫০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের মর্যাদা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ বছরে অগ্রগতির বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই দেশগুলো এগিয়ে গেছে। এসব নিয়ে বিশ্বব্যাংকের আসন্ন গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে বিস্তারিত তুলে ধরবে। যা আগামী ১৪ জানুয়ারী প্রকাশিত হবে।


২০২০ সালে প্রথমবারের মতো মাথাপিছু জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। ওই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ১ হাজার ৮৮৮ ডলার। আর ভারতের ছিল ১ হাজার ৮৭৭ ডলার।


এদিকে, ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে মাথাপিছু জিডিপিতে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ। ওই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৫৯ ডলার। পাকিস্তানের ছিল ১ হাজার ৪৬৮ ডলার। এরপর আর কোনো বছর পাকিস্তান বাংলাদেশকে ছাড়াতে পারেনি। মাথাপিছু জিডিপি ওঠানামার মধ্যে ছিল দেশটির। সর্বশেষ ২০২৩ সালে এসে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৭১ ডলার। ক্রয়ক্ষমতায় পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে, ভারতের চেয়ে পিছিয়ে।

আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে নেপালের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২২০ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৩৭০ ডলার হয়েছে। ওই সময়ে দেশটির আয় বেড়েছে ৫২৩ শতাংশ। পাকিস্তানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৪৭০ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫০০ ডলার হয়েছে।


ভুটানের মাথাপিছু জাতীয় আয় ৭২০ ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৭৪০ ডলার। ওই সময়ে দেশটির মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৪১৯ শতাংশ। মায়ানমারের মাথাপিছু জাতীয় আয় ২০০০ সালে ছিল ১৯০ ডলার। গত বছর তা বেড়ে দাড়িয়েছে ১ হাজার ২১০ ডলারে। ওই সময়ে দেশটির মাথাপিছু জাতীয় আয় বেড়েছে ৫৩৭ শতাংশ।

রিয়াদ

×