কবি হেলাল হাফিজ।
নিজ জন্মস্থান নেত্রকোনার প্রতি প্রচণ্ড অভিমান ছিল কবি হেলাল হাফিজের। ফলে নেত্রকোনায় তেমন একটা আসতেন না। গত ৫০ বছরে মাত্র তিনবার নিজের জন্মভূমি নেত্রকোনায় আসেন কবি হেলাল হাফিজ।
সর্বশেষ আসেন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত নেত্রকোনার বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবে, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার গ্রহণ করতে। তা-ও স্থানীয় ভক্ত, সহপাঠী এবং স্বজনদের বিশেষ পীড়াপীড়িতে।
কবি হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার বড়তলী গ্রামে। তার শৈশব, কৈশোর ও তারুণ্য কেটেছে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়ায়।
১৯৬৫ সালে নেত্রকোনা শহরের দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেই যে রাজধানীবাসী হন, আর ফেরেননি নিজ এলাকায়।
নেত্রকোনারই এক নারীর সঙ্গে কৈশোরকাল থেকে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কবির। কিন্তু সবে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন, ঠিক তখন ওই নারীকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন তার মা-বাবা। এ কারণে আজীবন এক বিরহ-যন্ত্রণাকে লালন করে বেঁচেছিলেন কবি। আর তা দিয়ে বুনন করে গেছেন অনন্য সব কবিতা। চাওয়া-পাওয়ার হিসেব-নিকেশ তার কাছে ছিল নিতান্ত তুচ্ছ। এসব কারণে জন্মভূমি নেত্রকোনার প্রতিও ছিল তার এক ধরনের প্রচ্ছন্ন অভিমান।
শুক্রবার দুপুরে কবির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর নেত্রকোনার সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনে এক ধরনের শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকেই দেখা গেছে কবির নানান স্মৃতি হাতড়াতে।
নেত্রকোনা উদীচীর স্থানীয় জেলা সংসদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হেলাল হাফিজ বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় কবিদের মধ্যে অন্যতম। আর তার জন্ম আমাদের নেত্রকোনা জেলায়। এ কারণে আমরা নেত্রকোনাবাসী হিসেবে সবসময় গর্ব অনুভব করি। বিশ্বাস করি, অনন্য সৃষ্টিশৈলীর কারণে ভক্তদের মাঝে তিনি বহুকাল বেঁচে থাকবেন।
আর কে