ছবি: সংগৃহীত।
রাজধানীর রমনার কাকরাইল মোড় এলাকায় র্যাবের পরিচয়ে সংঘটিত এক ভয়ঙ্কর ডাকাতির ঘটনায় মাইক্রোবাসসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. সাজ্জাদ হোসেন (৩৫), মো. কবির হোসেন (৫০), মো. শরিফ (২৫), মো. মনির হোসেন (৪০), ও মো. হাবিবুর খন্দকার (৩৮)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস এবং আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনাটি সম্পর্কে উপ-পুলিশ কমিশনার জানান, গত ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ডেমরার মাতুয়াইলের ট্রাসমি কোম্পানি লি.-এর ডিএমডি সাইফুল ইসলাম (৩৮) নগদ ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকা একটি স্কুল ব্যাগে করে বাড্ডার বাসায় যাওয়ার জন্য বংশাল চৌরাস্তা থেকে প্রচেষ্টা বাসে ওঠেন। বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে রমনার কাকরাইল মোড়ে বাসটি ট্রাফিক সিগন্যালে থামলে হঠাৎ ১০-১২ জন লোক বাসে উঠে নিজেদের র্যাবের সদস্য বলে পরিচয় দেয়। তাদের মধ্যে একজন ‘র্যাব’ লেখা জ্যাকেট পরিহিত এবং হাতে হ্যান্ডকাফ ও ওয়্যারলেস সেট ছিল। তারা যাত্রীদের ভয় দেখিয়ে সাইফুল ইসলামকে আটক করে বাস থেকে নামিয়ে জোরপূর্বক একটি সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
মাইক্রোবাসে সাইফুল ইসলামের হাত পেছনে বাঁধে এবং তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এরপর ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে। সাইফুল ইসলামের সঙ্গে থাকা ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগে থাকা ১০ হাজার টাকা, হাতঘড়ি, বেল্ট সবকিছু ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে দুই হাত ও চোখ বেঁধে ডেমরা এলাকার এক রাস্তায় ফেলে দেয়।
এ ঘটনার পর সাইফুল ইসলাম ১১ ডিসেম্বর ডিএমপির রমনা মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবং তার অভিযোগের ভিত্তিতে ডাকাতির মামলা রুজু হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছে, তারা একটি সংঘবদ্ধ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। এই দলটি রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে থাকে। তারা নিজেদের মধ্যে চেইন অব কমান্ড মেনে চলতে অভ্যস্ত এবং ডাকাতির পর নিজেদের ভাগ ভাগ করে নেয়। এই দলের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১০-১২ জন এবং তারা একেকটি ডাকাতি ঘটনার জন্য আলাদা আলাদা দায়িত্বে থাকে।
এই ঘটনায় পুলিশ আরও তদন্ত শুরু করেছে এবং তাদের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজে অভিযান চালাচ্ছে।
নুসরাত