হাসনাত আবদুল্লাহ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আহতরা রাস্তায় রক্ত দিয়েছে। আর এই রক্তের উপর দিয়ে আপনি সংসদে যাবেন? তাহলে মনে রাখবেন জাতীয় বেইমান হিসেবে পরিচিত হবেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিপীড়িতদের গণজমায়েতে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘যেই আওয়ামী লীগ এখনো পর্যন্ত একটা সরি পর্যন্ত বলে নাই, এখনো পর্যন্ত তারা অপরাধ স্বীকার করে নাই, তাদের সাথে কিসের রিকনসিলিয়েশন? তারা ক্ষমা চাওয়া তো দূরে থাক তারা এখন হুমকি দিচ্ছে বিদেশে বসে। কিন্তু আমরা দেখছি মুরুব্বিদের মধ্যে তাদের জন্য মায়া হচ্ছে। মনে রাখবেন যারা এই রিকনসিলিয়েশনের আলাপ তুলছেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে দেখতে চাচ্ছেন, আপনারা ক্ষমতামুখী। আর আমরা আহত এবং যারা জীবন্ত শহীদ, আমরা হচ্ছি জনতামুখী।’
তিনি আরো বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত না আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত হবে ততদিন পর্যন্ত আগে বিচারের প্রশ্নে আমি মুরুব্বিদেরকে বলতে চাই যারা বিশেষজ্ঞ রাজনীতিবিদ আছেন, যারা রাজনীতি করছেন, আপনারা ক্ষমতায় যাবেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এগুলোর জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের পূর্বে তাদেরকে যদি আপনারা রাজনীতির ময়দানে ফিরিয়ে আনতে চান তাহলে এই আহতদের রক্তের উপরে পাড়া দিয়ে আপনারা তাদেরকে মাঠে আনতে হবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘প্রিয় সহযোদ্ধা, আপনারা জানেন আমাদের এই পার্শ্ববর্তী দেশ এখন বাংলাদেশ যাদেরকে জঙ্গি স্বীকৃতি দিয়েছে তাদেরকে এখন পার্শ্ববর্তী ভারতে আশ্রয় দিচ্ছে। ভারতের বেতনভুক্ত কর্মচারী শেখ হাসিনা ভারতের প্রেসক্রিপশনে গুম-খুন, হত্যাকাণ্ডগুলো চালিয়েছে। এখন আমরা ভারতকে বলতে চাই, যেন সেফ হাউস অফ টেরোরিস্ট না হয়ে উঠে। আমরা ভারতের সাথে আর কোন নীল ডাউন ডিপ্লোমেসিতে যেতে চাই না। নতজানুর কোন ডিপ্লোমেসি ভারতের সাথে চলবে না। ভারতের সাথে সম্পর্ক হবে চোখে চোখ রেখে। আলেমের রক্ত আমাদের গায়ে লেগে আছে, আহতদের রক্ত আমাদের গায়ে লেগে আছে। আমার ভাই ইলিয়াস গুম হয়েছে। তাদের দুঃখ স্মৃতি আমাদের মনে আছে। তাদের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে ভারতের সাথে কোন নতজানু সম্পর্ক আর হবে না। ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক হবে ন্যাজ্যতার ভিত্তিতে, আমাদের ঈর্ষার ভিত্তিতে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত জঙ্গিদেরকে এখন আশ্রয় দিচ্ছে, জঙ্গিদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে এবং গুজরাট কষাই আমার দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টে মদদ দিচ্ছে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বলেন, ‘ভাই আমার ভাই আবু আলিফকে দিন দুপুরে রাস্তায় ফেলে জবাই করা হয়েছে। জবাই করার পরেও আমাদের বাংলাদেশে আলেম সমাজ আমরা ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। এটি হচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের শক্তি। আমরা ভারতের কোন ষড়যন্ত্রে পাড়া দেই নাই। ভারত চেয়েছিল আমাদের যারা বন্ধু হিন্দু ভাই, আমাদের যারা সংখ্যালঘু রয়েছে তাদের সাথে আমরা সংঘর্ষে জড়াই। কিন্তু আমরা ভারতের কোন ষড়যন্ত্রে পা দেই নাই। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু তারাই যারা বাংলাদেশের বিপক্ষে। আমার কোন হিন্দু ভাই সংখ্যালঘু না, আমার কোন বৌদ্ধ ভাই সংখ্যালঘু না, আমার কোন বাঙালি ভাই সংখ্যালঘু না। বাংলাদেশের বিপক্ষে যারা তারাই হচ্ছে সংখ্যালঘু।’
তিনি আরো বলেন, ‘আর কোন বাংলাদেশের সমঝোতার রাজনীতি নয়। আর কোন গুম নয় আর কোন হত্যা নয়। আর কোন ফ্যাসিবাদের উত্থান নয়। যেখানে ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে, সেখানেই আমরা একসাথে লড়বো।’
এম হাসান