আরব বসন্ত ছিল ২০১০ সালের শেষের দিকে শুরু হওয়া এক ধারাবাহিক গণআন্দোলন যা মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এসব আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল স্বৈরশাসক সরকারগুলোকে উৎখাত করা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই আন্দোলনের মাধ্যমে তিউনিশিয়া, মিশর, লিবিয়া, এবং ইয়েমেনে সরকার পরিবর্তন হলেও সিরিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটি আলাদা ছিল।
বাশার আল-আসাদ এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের শাসন আরব বসন্তের অন্যতম প্রধান একটি অধ্যায়। বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় ছিলেন । ২০১১ সালে আরব বসন্তের ঢেউ সিরিয়াতেও এসে পৌঁছালে আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সিরিয়ার জনগণের দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল, আসাদের শাসনে রাজনৈতিক অধিকার দমন করা হয়েছে এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য চরমে পৌঁছেছে। মানুষ স্বাধীন নির্বাচন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি জানায়।
বাশার আল-আসাদ তার শাসন টিকিয়ে রাখতে ইরান এবং রাশিয়ার সমর্থন পায়। রাশিয়া সিরিয়ার সরকারকে সামরিক এবং রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করেছে, বিশেষ করে বোমা হামলার মাধ্যমে বিদ্রোহীদের দমন করতে।
আরব বসন্তের প্রভাব
আরব বসন্ত সিরিয়ায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে চরম অস্থিতিশীলতা নিয়ে এসেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে, এবং কোটি কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। যদিও কিছু দেশে আরব বসন্ত সাময়িক পরিবর্তন আনতে পেরেছিল, সিরিয়ার পরিস্থিতি এই আন্দোলনের সবচেয়ে করুণ উদাহরণ হিসেবে রয়ে গেছে।
দীর্ঘ ২৪ বছর পর আসলেও বসন্ত ছুয়েছে আজ সিরিয়াতে, সিরিয়ার বিদ্রোহীদের আক্রমণের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা নেই, তবে ধারণা করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে তার ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ একটি প্লেনে করে অজ্ঞাত গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন।
জাফরান