নির্বাচন ভবন
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের টানাপোড়েন নতুন মাত্রা যোগ হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে রোডম্যাপ ঘোষণাসহ দ্রুত নির্বাচনের দাবি উঠেছে। দ্রব্যমূল্য, মূল্যস্ফীতিসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও কঠিন চ্যালেঞ্জে সরকার। এই বাস্তবতায় সরকারের ভিতরেও নির্বাচন প্রশ্নে দ্রুততার তাগিদ তৈরি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন চাইছে রাজনৈতিক দলগুলো। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের একাধিক উপদেষ্টার বক্তব্যে আগামী বছরের মধ্যেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। সেই আলোকে তারা রাজনৈতিক মাঠ গুছিয়ে নিচ্ছে। একই সঙ্গে নির্বাচনী জোট নিয়েও চলছে নানা বৈঠক।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী বছরের ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সংসদীয় আসনের সীমানাসংক্রান্ত অভিযোগগুলো পর্যালোচনা করছে ইসি।
পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এক অনুষ্ঠানে আগামী বছরেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আগামী বছরই আমরা একটা রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত সরকার দেখব।’ যদিও তিনি বলেছেন, ‘(এটি) আমার ব্যক্তিগত মতামত। জানি না কী হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কমিটমেন্ট ছিল বৈষম্যবিরোধী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। তবে সংস্কারের কথা বলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার হওয়া উচিত নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সংস্কার করা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) আয়োজিত ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, টেকসই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘কোনো কোনো উপদেষ্টার কাছ থেকে আমরা শুনেছি, আগামী বছর নির্বাচন হবে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ওনার (প্রধান উপদেষ্টা) মুখ থেকে যখন ঘোষণা দেওয়া হবে, তখন নির্বাচন হবে।’
গত ২৪ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, আগামী নির্বাচন কবে হবে, তা প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। এ নিয়ে বাকি যাঁরা কথা বলছেন, সেগুলো তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত।
চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ২ মার্চ : চলতি বছরের নতুন ভোটারদের যুক্ত করে আগামী বছরের ২ জানুয়ারি ভোটার তালিকার খসড়া এবং ২ মার্চ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপর আগামী বছরের ২ মার্চের পর থেকে ভোটার তালিকা হালনাগাদে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবে সাংবিধানিক এই সংস্থটি। তারা ২০২৬ সালের ২ মার্চের চূড়ান্ত হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন।
সবশেষ গত ২ মার্চ প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ১২ কোটি ১৮ লাখের বেশি ভোটার রয়েছেন। আগামী জানুয়ারিতে নতুন ভোটার যুক্ত হবে প্রায় ১৭ লাখ। ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি যারা ভোটারযোগ্য হবেন, এ বছরের হালনাগাদের সময় তারা যুক্ত হবেন।
শহীদ