ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

আইইইএফএর প্রতিবেদন 

বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় সম্ভব

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় সম্ভব

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির বোঝা ক্রমান্বয়ে শূন্যের কাছাকাছি

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির বোঝা ক্রমান্বয়ে শূন্যের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে বলে মনে করছে ইনস্টিটিউট ফর অ্যানার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ)।
বৈশ্বিক এই সংস্থাটি বলছে, বিদ্যুৎ খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে বছরে ১২০ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।
বুধবার আইইইএফএর ওয়েবসাইটে দেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদনটি লিখেছেন আইইইএফএর বাংলাদেশের প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত বার্ষিক ১ দশমিক ৮ গুণ রাজস্ব বৃদ্ধির বিপরীতে পিডিবির 
বার্ষিক ব্যয় বেড়েছে ২ দশমিক ৬ গুণ। ফলে সরকারকে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়েছে পিডিবি।
আইইইএফএ তার প্রতিবেদনে বলেছে, শিল্পে উৎপাদিত নিজস্ব বিদ্যুৎ চাহিদার অর্ধেক জাতীয় গ্রিড থেকে মেটাতে হবে। নতুন করে তিন হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করতে হবে। এর সঙ্গে বছরে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিতরণে অপচয় ৮ শতাংশের মধ্যে রেখে এই অর্থ বাঁচাতে পারে পিডিবি।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা ৬১ শতাংশ। অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার জন্যই পিডিবির ভর্তুকির বোঝা ক্রমেই ভারি হয়েছে। দফায় দফায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করার পরও ভর্তুকি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতা কমাতে বিদ্যুতের চাহিদার প্রাক্কলনে জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধিকে বিবেচনায় নিতে হবে।
আইইইএফএ বলছে, ২০৩০ সালে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট হতে পারে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজার মেগাওয়াটের জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক পুরনো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা হলেও ৩৫ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকবে। এতে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎসহ অতিরিক্ত সক্ষমতা ৩৬ শতাংশে নেমে আসবে। আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল, এমন নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ বাদ দিলে এটি হবে ২০ শতাংশ। ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে এটি তুলনীয় হবে।
জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি ও শিল্প কারখানার চাহিদা গ্র্রিডের বিদ্যুৎ দিয়ে মেটানোর পদক্ষেপকে বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুতের চাহিদার প্রাক্কলন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইইইএফএ।

×