ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বদলে যাচ্ছে টাকার নকশা, বাদ যাচ্ছে শেখ মুজিব

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বদলে যাচ্ছে টাকার নকশা, বাদ যাচ্ছে শেখ মুজিব

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারমূলক কার্যক্রম শুরু করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রাষ্ট্রীয় সম্পদ, অধিকার ও এখতিয়ারে থাকা বিভিন্ন বিষয়ে এক দলীয়, এক ব্যক্তি ও এক পরিবার কেন্দ্রিক যত ছাপ রয়েছে তা অপসারণের দাবি জোড়ালো হয় জনগণের মধ্য থেকে। সেই ধারাবাহিকতায় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাংক নোটে।

 

মাসখানেক আগে গুঞ্জন উঠেছিল ব্যাংক নোটের নকশা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে অস্বস্তি ছিলো দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে। তবে এবার জানা যাচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি সরিয়ে নতুন নোট শীঘ্রই বাজারে আসতে যাচ্ছে।

২০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করছে সরকার। নতুন নোটে থাকবে না শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। নতুন করে যুক্ত হবে ধর্মীয় স্থাপনা, বাঙালি ঐতিহ্যসহ জুলাই বিপ্লবের গ্রাফিতি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে। নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাজারে আসবে নতুন টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান নকশা থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরিয়ে নেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে চারটি নোটের ডিজাইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। পরবর্তীতে ধাপে ধপে দেশের সব ধরনের ব্যাংক নোটের ডিজাইন নতুন করা হবে। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ নতুন নোটের বিস্তারিত নকশার প্রস্তাব জমা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তবে  নতুন নোট ছাপানোর বিষয়ে মূল সুপারিশ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রা ও নকশা উপদেষ্টা কমিটি। কমিটির সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-১। কমিটিতে চিত্রশিল্পীরাও রয়েছেন।

বাংলাদেশের মুদ্রা ছাপানোর কাজটি করে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড, যা টাঁকশাল নামে পরিচিত। নকশা চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে কাগজ, কালি ও প্লেট তৈরি করা হয়। নকশা অনুযায়ী বিদেশ থেকে প্লেট তৈরি করে আনার পর ছাপার কাজটি করে টাঁকশাল। বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় টাকা ছাপায় না। সাধারণত একটি নোট ৪-৫ বছর চলে। এরপর তা পুনর্মুদ্রণ করা হয়। ছোট মানের নোট বেশি হাতবদল হওয়ায় তা দ্রুত নষ্ট বা ব্যবহার অনুপযোগী হয়।

টাকা ছাপানোর কাজটিও ব্যায়বহুল। বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে নতুন নোট ছাপতে।

টাঁকশালের এক কর্মকর্তা জানান, টেন্ডারের কাজটি হয়ে গেলেই নতুন টাকা বাজারে আসতে সময় লাগেবে না। আপাতত টাকা ছাপানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী আবার টাকা ছাপানো শুরু হবে।

এমএম

×