ছবি: সংগৃহীত
মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরি নিয়ে কর্মরতদের তালিকা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৫৬ জনের তথ্য পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কিছু আছেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। তাঁরা ভুয়া সনদ তৈরি করে চাকরি নিয়েছেন। তাঁদের চাকরি থেকে বাদ দিতে তালিকা করছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভুয়া সনদে যাঁরা চাকরি নিয়েছেন, তাঁদের শাস্তি হতেই হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং যে যে মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরি নিয়েছেন, সেই মন্ত্রণালয়কে জানাব। বিধিগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে। ভুয়া সনদ তৈরি করে যাঁরা আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন, তা ফেরত নেওয়া হবে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আসা তালিকার অর্ধেক যাচাই করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকের মুক্তিযোদ্ধার সনদ খুঁজে পাওয়া যায়নি। এখন পর্যন্ত কতজনের সনদ পাওয়া যায়নি, সেই সংখ্যা আলাদা করা হয়নি। সব তালিকা যাচাইয়ের পর এসব তথ্য আলাদা করা হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের সব ধরনের তালিকা যাচাই করে ২ লাখ ৬ হাজার ৫১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিস্তারিত তথ্য সমন্বিত তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। কয়েকজনের আপিল আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়ায় সমন্বিত তালিকায় আরও কিছু নাম অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাঁদের মধ্যে যাঁদের নাম এমআইএসে রয়েছে, তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন।
কর্মকর্তারা জানান, আগে মুক্তিযোদ্ধাদের সনদে নিরাপত্তামূলক বৈশিষ্ট্য যুক্ত না থাকায় অনেকেই এ সনদ বানিয়ে সুবিধা নিয়েছেন। রাজনৈতিক বিবেচনায়ও অনেককে মুক্তিযোদ্ধার সনদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সব তালিকা যাচাই করে সমন্বিত তালিকায় যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁরাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। সমন্বিত তালিকায় যাঁদের নাম নেই এবং তাঁদের আপিল আবেদন নিষ্পত্তি হয়ে থাকলে তাঁদের আর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে না। সমন্বিত তালিকায় নাম থাকার পর এমআইএসে নাম না থাকলেও তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বর্তমান ডিজিটাল সনদে ১৪টি নিরাপত্তামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের এমবসড মনোগ্রাম, অদৃশ্য আলট্রাভায়োলেট কালি, জাতীয় স্মৃতিসৌধের ডিজিটাল জলছাপ, এমআইএস নম্বর, ঘোস্ট ইমেজে বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিচিতি নম্বরের ১১ ডিজিট এবং মন্ত্রী ও সচিবের সই। বিশেষ অ্যাপ ব্যবহার করে এ সনদ যাচাই করা যাবে।
তালিকা যাচাইয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক কর্মকর্তা বলেন, তালিকা যাচাই করার পর নির্ধারিত ফরম্যাটে তা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টাকে দেওয়া হবে। ভুয়া সনদ দেখিয়ে চাকরি নেওয়া কর্মচারীদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের দেওয়া বেতন-ভাতা ফেরত চাওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
ইসরাত