ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

মিরপুরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান, জরিমানা

বাজারে সরবরাহ বাড়ায় শীতের সবজির দাম কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৩০, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

বাজারে সরবরাহ বাড়ায় শীতের সবজির দাম কমেছে

বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাজারে আসছে শীতের সবজি। দাম কিছুটা কম হওয়ায় বাড়ছে ক্রেতা

অবশেষে শীতের সবজির বাজারে স্বস্তি ফিরে এসেছে। গত সপ্তাহেও শীতের বেশিরভাগ সবজি অধিক দামে বিক্রি হয়েছিল। তবে এ সপ্তাহে বাজারে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দাম ডজনে কমেছে পাঁচ টাকা করে। মাংসের দাম আগের দিনের তুলনায় সামান্য কমেছে। শুক্রবার রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারের এই চিত্র।
শুক্রবারের বাজারে নতুন আলু ১১০-১২০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ১৬০ টাকা, টক টমেটো ১৬০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০-৭০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৭০-৮০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৮০-১০০ টাকা, শসা ৮০-১২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, মুলা ৪০-৬০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, পটোল ৬০-৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল  ৭০-৮০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, কচুর লতি ৬০-৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৪০-১৬০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আকারভেদে প্রতিটি লাউ ৮০-১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৪০ টাকা, এক হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা করে।
গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনায় প্রতি কেজিতে নতুন আলু দাম কমেছে ১০-২০ টাকা। এ ছাড়া চায়না গাজরের দাম ২০ টাকা, শিমের দাম ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুনে ১০-২০ টাকা, কালো গোল বেগুনের দাম ১০-২০ টাকা, মুলার দাম ১০-৩০ টাকা, পটোলের দাম ২০ টাকা, চিচিঙ্গার দাম ২০ টাকা, ধুন্দলের দাম ২০-৩০ টাকা, ঝিঙার দাম ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার দাম ১০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ২০ টাকা কমেছে।

এ ছাড়া শুক্রবারে প্রতি কেজিতে ভারতীয় টমেটোর দাম বেড়েছে ১০ টাকা। পেঁপে ১০ টাকা, ঢেঁড়স ২০ টাকা এবং ঝিঙার দাম ২০ টাকা বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সবজি বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, সব সবজির দামই কমেছে। শীতের সময় চলে আসছে। বাজারে সবজিও বাড়ছে। তাই সামনে সবজির দাম আরও কমবে।
অপরিবর্তিত রয়েছে আলু-পেঁয়াজের দাম ॥ বাজার করতে আসা ক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, অনেক সবজির দাম কমেছে এটা সত্যি। তবে আরও দাম কমতে হবে। এই দাম সবার জন্য স্বস্তিদায়ক, এটা এখনো বলা যায় না। আলু, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে বিক্রেতারা জানান, বাজারে নতুন পেঁয়াজ (গাছসহ পেঁয়াজ) আসতে শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম আরও কমে আসবে।
বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা করে। এ ছাড়া লাল আলু ৮০ টাকা, সাদা আলু ৮০ টাকা, বগুড়ার আলু ৯০ টাকা, দেশী রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, চায়না আদা ২৪০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭৫-১৯৮ টাকা, কক মুরগি ২৯০-২৯২ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮০ টাকা, দেশী মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪০ টাকা এবং সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে কেজিতে পাঁচ টাকা। কক মুরগির দাম কমেছে পাঁচ থেকে সাত টাকা। এ ছাড়া গরুর মাংস, খাসির মাংস, দেশী মুরগি ও লেয়ার মুরগির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এ ছাড়া ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দাম কমেছে ডজনে পাঁচ টাকা করে।
এ ছাড়া বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৮০০-২২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১২০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ ২০০-৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৮০০ টাকা, শিং ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৯০০ টাকা, কাজলী মাছ ৮০০-১২০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, চিতল মাছ ৫০০-১২০০ টাকা, সরপুঁটি ২০০-৬০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ৮০০-১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুদিপণ্যের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে চিনির দাম। তবে খোলা সয়াবিন ও খোলা সরিষার তেলের দাম বেড়েছে। ছোট মসুর ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেসারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৪৫ টাকা, মাষকলাই ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাও চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১২৫ টাকা, খোলা চিনি ১২৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে প্যাকেটজাত ও খোলা চিনির দাম কমেছে কেজিতে পাঁচ টাকা করে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান ॥ মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজারে বাজার মনিটরিংয়ে আসে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটির সহকারী পরিচালক কাজী সুজনের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযান শেষে তিনি বলেন, আমরা মুরগির বাজার, মাংসের বাজার ও ডিমের বাজারে অভিযান চালিয়েছি। এ সময় কয়েকজনকে জরিমানা করা হয়েছে। কয়েকটি মুরগির দোকানে বিএসটিআই অনুমোদিত ওয়েট মেশিন না থাকায় আমরা তাদের সতর্ক করে নতুন মেশিন আনার জন্য এক সপ্তাহ সময় দিয়েছি।

আমরা আমাদের নিয়ম অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে যাবো। তিনি বলেন, অভিযানে ফ্রেশ কাট চিকেন সার্ভিসকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় এই জরিমানা করা হয়। কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে মুন্সীগঞ্জ চিকেন হাউসকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ওজন কম দেওয়ার অভিযোগে শেখ সালমান ট্রেডার্সকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

×