সংবিধান বিষয়ক জাতীয় পার্টির প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের
সংবিধান সংস্কারে বিভিন্ন প্রস্তাবনা দিয়েছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। দলটি বলছে, সরকারি দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি না হওয়ার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজিত করা উচিত। পাশপাশি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করা উচিত। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করতে চাই যে সংসদ সদস্যদের সংসদের নিজ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোটদানের সুযোগ থাকবে। তবে, তারা সেটা করতে পারবেন যখন দলীয় সংসদ সদস্যদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট বিভাজন দেখা যাবে এবং কমপক্ষে দলীয় সংসদ সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদকে সেভাবে পরিবর্তন করার প্রস্তাব করছি। এর ফলে দরকষাকষি কিছুটা কঠিন হয়ে পড়বে এবং সংসদ অধিকতর কার্যকর ও সরকারের স্থায়িত্ব কিছুটা হলেও নিশ্চিত হবে। দলত্যাগ বিরোধী বিধি-বিধানের উপরের পরামর্শের জন্য, ‘দশম তফসিল, অনুচ্ছেদ ৩’, ভারতের সংবিধান অনুসরণ করা হয়েছে।
কাদের বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করা উচিত। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল হলে নির্বাচন পরিচালনার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের বিধানগুলো পুনরায় চালু করা হবে। সংসদে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে নির্বাচিত হয়ে প্রস্তাবিত রাষ্ট্রপতি, সর্বসম্মত প্রার্থী বিবেচিত হতে পারেন। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারেন।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, দুজন ডেপুটি স্পিকারের বিধান থাকা উচিত, একজনকে অবশ্যই বিরোধী দল থেকে মনোনীত/নির্বাচিত হতে হবে। অনুচ্ছেদ-৭৪ (১) অনুযায়ী দুই ডেপুটি স্পিকারকে সরকারি দল এবং বিরোধী দল থেকে একজন করে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনীর প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, আমরা প্রস্তাব করছি, রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ছাড়াই প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ দেবেন। তবে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সদস্যদের মনোনয়নে রাষ্ট্রপতি একটি ‘অনুসন্ধান কমিটি’ গঠন করবেন। অনুসন্ধান কমিটিতে এক-তৃতীয়াংশ সদস্যকে অবশ্যই বিরোধী দল থেকে মনোনীত করতে হবে। অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেবেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, তথ্য অধিকার কমিশন ইত্যাদির মতো অন্যান্য সব সাংবিধানিক সংস্থার জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে।