হাসনাত-সার্জিসকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রাজু ভাস্কর্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ কর্মসূচি।
চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জেয়ারত শেষে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সার্জিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয়ে এই বিক্ষোভ করেন তারা। এসময় তাদেরকে ভারত, আওয়ামী লীগ ও ইসকন বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
সমাবেশে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে হিন্দুত্ববাদী প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণে যারা জড়িত তাদের যথাযথ বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
আখতার আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের কূটনীতি, বাংলাদেশের ক্ষমতা কাঠামোকে দিল্লির প্রভাব মুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ দিল্লী বা ওয়াশিংটনের গোলাম নয়, বাংলাদেশের মানুষ স্লোগানে স্লোগানে জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ আমার দেশের মাটির প্রতিটি ধূলিকণা নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এদেশের মাটি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যারা যুদ্ধ করছে, তাদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা দেশের মানচিত্র ও পতাকাকে সুমন্নত রাখার সংগ্রামে লিপ্ত তাদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। চব্বিশের ভীত বাংলাদেশের মাটি থেকে মুছে দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ষড়যন্ত্রকারীরা আবার আঘাত হানতে পারবে বলে মনে করলে তারা সবচেয়ে বড় ভুল করবে। তারা ভাবছে সার্জিস-হাসনাতদেরকে সরিয়ে দিলেই এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আর টিকে থাকবেনা। কিন্তু তাদের মাথায় রাখা উচিত যে, সার্জিস, হাসনাত, হান্নান মাসুদ ও আখতারদেরকে সরিয়ে দিলে হাজারো সার্জিস, হাসনাত, আখতার তৈরি হবে।
তিনি বলেন, দিল্লির মনে রাখা উচিত, এই স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের গোলাম শেখ হাসিনাকে সর্বশক্তি দিয়েও টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এদেশে বীর লড়াকু হিসেবে শুধু হাসনাত, সার্জিসরাই নয়, বরং রিক্সাচালক, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার প্রত্যেকেই একেকটা যোদ্ধা। এদেশের কৃষি খামারের একজন কর্মচারী থেকে শুরু করে সচিবালয়ের সচিব পর্যন্ত কেউই দিল্লির শাসন বরদাস্ত করবে না। দিল্লির দালালিকে বরদাস্ত করার মত আর এদেশে কেউ নেই।
হান্নান মাসুদ আরও বলেন, চিন্ময় দাসকে যখন গ্রেফতার করা হয়েছে, তখন দিল্লির মসনদ কেঁপে উঠেছে। যারা চিন্ময়ের পক্ষে দালালি করছে তারাই একে একে এদেশের বিপ্লবীদেরকে টার্গেট করছে। আমরা বলে দিতে চাই, চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানে আমরা সকলে শহীদ হয়ে গিয়েছি। প্রতিটি মুহূর্তই আমাদের জন্য বোনাস টাইম। আমরা যেকোনো সময় এ দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছি।
এমএম