ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

ডিম আমদানির পক্ষে নয় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:৩৫, ২৭ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ২০:৪২, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

ডিম আমদানির পক্ষে নয় প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়

ডিম

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির যে সুযোগ দিয়েছে তার পক্ষে নয়। কারণ এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা দেশের ডিম উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সার্টিফিকেট না নিয়ে ডিম আমদানি করলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে, যা পোল্ট্রির শিল্পের জন্য ঝুঁকির এবং বিপর্যয় আনতে পারে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একশ দিনে কাজের অগ্রগতি জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি তার মন্ত্রণালয়ের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রম সাংবাদিকদের তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যার প্রভাবে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। একই সঙ্গে কৃষি ফসলও নষ্ট হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কম ছিল। ফলে ডিমের চাহিদাও স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ছিল। তাই ডিমের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। সেটা এখন নেই। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগে মুনাফা লাভের জন্য ডিমের সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে। এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার যথেষ্ট অভিযান চালিয়েছে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। 

অন্যদিকে টিসিবি এবং ট্রাকে করে ন্যায্যমূল্যে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে খামারি পর্যায় থেকে সরাসরি বাজারে ডিম আনার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ডিমের বর্তমান দাম আরও কমানো যাবে যদি উৎপাদন খরচ বিশেষ করে ফিড, একদিনের বাচ্চা এবং বিদ্যুতের দাম কমানো যায়।

ফরিদা আখতার বলেন, পোল্ট্রি সেক্টর সংশ্লিষ্ট নয় এরকম ভুঁইফোড় সংগঠন ও ব্যক্তি দ্বারা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ খাতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রোধে মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পোল্ট্রিতে কৃষির হারে বিদ্যুৎ বিল ও ব্যাংকের সুদের হার নির্ধারণের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।

আগস্ট মাসের বন্যায় কৃষির পাশাপাশি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ১৩টি জেলার ৮৮টি উপজেলায় এক লাখ ৯৭ হাজার ১৬৬টি পুকুর/দিঘি/খামারের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ১০৭৫১৭ মেট্রিক টন মাছ ও চিংড়ি, পোনা নষ্ট হয়েছে ৪৪ কোটি। মৎস্যখাতে মোট ক্ষতি ১ হাজার ৮৯৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে গবাদিপশু (গরু ২.৬০ লাখ, মহিষ ৮ হাজার, ছাগল ৯৩ হাজার, ভেড়া ১০ হাজার, মুরগি ৩৪.২১ লাখ, হাঁস ৪.৬০ লাখ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মারা গেছে ৩৯ হাজার গরু, ১৬ হাজার ছাগল, মুরগি ২১ লাখ, হাঁস ২ লাখ। প্রায় ৭ লাখ ৮২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ টাকার অংকে ৪২৮ কোটি।

এছাড়া কৃষি ব্যাংকের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এনবিআরকে অগ্রিম আয়কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খামারিদের বিদ্যুৎ বিলে কৃষির ন্যায় ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার ব্যবস্থার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। পাশাপাশি পোল্ট্রিতে কৃষির হারে বিদ্যুৎ বিল ও ব্যাংকের সুদের হার নির্ধারণের জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে।

শহিদ

×