ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, বাংলাদেশ অস্থির হয়ে গেলে কী আপনারা ভালো থাকবেন? এখানে গৃহযুদ্ধ হয়ে গেলে এই সিচুয়েশনে সবচেয়ে বেশি কারা ভিক্টিম হবে? এইজন্য বাংলাদেশের সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্র সম্পর্ক পরিস্কার করেন?
গণমাধ্যমে এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
আসাদুজ্জামান আরও বলেন, গত এক সপ্তাহের ভিতরে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আওয়ামী ইসকন লীগ সনাতনী প্রান্তিক- ও মৌলবাদী একটা সংগঠন আছে, সেই সংগঠনটি গত তিন মাস ধরে প্রচণ্ডরকম উস্কানিমূলক বক্তব্য ও সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছে। আমরা রংপুরে দেখলাম, রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলায় যে লোকটিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, চিন্ময় দাশকে, তিনি হুংকার দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে নাকি হিন্দুদের উচ্ছেদ করবার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র যদি অব্যাহত থাকে, আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই,ইরাক সিরিয়া-লিবিয়াতে কী হয়েছে? আমরা এখন যারা দুনিয়ার খোঁজখবর রাখি, দেশগুলোতে গৃহযুদ্ধ চলছে
পশ্চিমা ন্যাটো শক্তি ৭টা মুসলিমে দেশকে ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পনার করেছিল ২০০০ সালে তার অংশ হিসেবে সেই জায়গা থেকে দেখতে পাচ্ছি ইসকনের নেতা যে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশের পতাকার ওপর ইসকনের পতাকা দিয়েছে, এটা যে পরিকল্পিতভাবে একটা উস্কানি, এই ঘটনার সঙ্গে, ইতিহাসে দেখেছি
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যা করার পরে ভারত আমাদের রাষ্ট্রে ইন্টারফেয়ার করেছে। একই লেভেলে ইন্টারফেয়ারের এটমটা দেখতে পাচ্ছি।
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন আছে যেমন সত্য, তেমনি সংখ্যালঘুদের একটা মতলববাজি একটা রাজনীতি আছে, সংখ্যালঘুদের এই মতলববাজি রাজনীতিটা বাংলাদেশে জনগণের মধ্যে কমিউনিতে যে হারমোনিয়াম ছিল
সবার ভিতর যে সম্পর্ক ছিল, দরদ ছিল, এই দরটাকে অ্যাফেক্ট করছে, ভারত যেহেতু মতলববাজি রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করছে। হিন্দুরা ইনসিকিউরিটির মধ্যে পড়ছে বরং হিন্দুরা ক্রস বর্ডারের মধ্যে অ্যাফেক্ট পড়ছে। মনেই হচ্ছে- ভারত পরিকল্পিতভাবে এটা করছে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য মীর জাফর ও জগৎশেঠরা এখনো বাংলাদেশে রয়ে গেছেন। বাংলাদেশে তারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।
শুধু আওয়ামী লীগ হয়ে বাঁচতে চান না, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক হয়ে থাকতে চান, আপনাদের অবস্থানটা পরিস্কার করতে হবে। ইসকন লীগ থেকে আপনাদের সমস্ত সত্ত্বা বের করে আনতে হবে। সংবিধানে আপনাদের অধিকার অন্য দশ জনের মতোই আছে।
গেল পূজায় ৪০ হাজার মণ্ডপ মুসলমানরাই পাহারা দিয়েছে। ইসলামিক দলগুলো-ছাত্ররাই তা করেছে। কিন্তু আপনারা তা সম্মান করছে না। এই যে আমাদের ভালোবাসা, দায় এবং মহাব্বতের যে জায়গাটা সেই জায়গাটায় সম্মান করছে না।
হিন্দুদের সনাতনী ব্যানারে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করতে চান? শুধু মাত্র দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য? পরবর্তী সম্পর্কের জন্য কী ভালো হবে? বাংলাদেশ অস্থির হয়ে গেলে কী আপনারা ভালো থাকবেন? এখানে গৃহযুদ্ধ হয়ে গেলে এই সিচুয়েশনে সবচেয়ে বেশি কারা ভিক্টিম হবে? এইজন্য বাংলাদেশের সাধারণ হিন্দু সম্প্রদায়ের আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্র সম্পর্ক পরিস্কার করেন?
ইসকনের মতো সন্ত্রাসী গুণ্ডা লীগ থেকে নিজেদের আলাদা করেন। এটা খুব জরুরি।
উল্লেখ্য: আসাদুজ্জামান ফুয়াদের জন্ম খুলনার খালিশপুরে। গ্রামের বাড়ী বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায়। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল বারেক ভুঁইয়া ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৯ম সেক্টরের বেইজ কমান্ডার ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি বাম-রাজনীতি ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন। মা একজন গৃহিণী।
তিনি মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেছেন গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী হাই স্কুল থেকে। এইচ এস সি/উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজে। পরবর্তীতে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র আইন বিভাগে যেখানে তিনি দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ে লন্ডনে চলে যান উচ্চ শিক্ষার জন্য।
এসআর