ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জাহাজ ক্রয়ের ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তির চেক হস্তান্তর করলো নৌ-মন্ত্রণালয়

 স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৫৫, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

জাহাজ ক্রয়ের ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তির চেক হস্তান্তর করলো নৌ-মন্ত্রণালয়

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নিকট চেক হস্তান্তর করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়

চীনের ঋণে ৬ টি সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজ ক্রয় করেছিলো বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন (বিএসসি)। সরকার টু সরকার (জিটুজি) ঋণচুক্তির মাধ্যমে জাহাজ ৬টি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বিএসসি’র বহরে যুক্ত হয়। বিএসসি ৫৩ বছরের ইতিহাসে সর্বশেষ অর্থবছরে সর্বোচ্চ মুনাফা (২৫০ কোটি টাকা) অর্জন করে। এ ক্রমাগত অগ্রগতিতে প্রকল্পের মাধ্যমে বহরে সংযুক্ত ৬টি জাহাজের ভূমিকা অপরিসীম বলে বিএসসি’র কর্মকর্তারা জানান। 

তাই বিএসসি’র ৬টি জাহাজ ক্রয় প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭৫ কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর নিকট হস্তান্তর করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার হাতে এই চেক তুলে দেয়া হয়। এ সময় অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এবং বিএসসি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেকসহ অন্যান্য কর্মকতাগণ উপস্থিত ছিলেন।

নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ৬ টি নতুন জাহাজ ক্রয় (প্রতিটি প্রায় ৩৯ হাজার ডিডব্লিউটি সম্পন্ন ৩ টি নতুন প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার এবং ৩ টি নতুন বাল্ক ক্যারিয়ার)” শীর্ষক প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকার (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর একটি ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই ঋণচুক্তির পরিমান ছিলো প্রায় ১ হাজার ৪৫৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এই ঋণ পরিশোধের জন্য গত ২৭ অক্টোবর অর্থ বিভাগ ও বিএসসি-এর মধ্যে অপর একটি (এসএলএ) স্বাক্ষরিত হয়।

সে প্রেক্ষিতে মোট ২৪২৫.০২ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার (অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়)-কে বিএসসি হতে আগামী ১৩ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। স্বাক্ষরিত এসএলএ চুক্তি অনুযায়ী গ্রেস পিরিয়ডকালীন মোট সুদের পরিমাণ ৪৭৫ কোটি ২৫ লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ টাকা চেক মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে।

প্রকল্পের আওতায় সংগৃহীত ৬টি জাহাজের মধ্যে ৫টি জাহাজ (এম. ভি. বাংলার জয়যাত্রা, এম. ভি. বাংলার অর্জন, এম. টি. বাংলার অগ্রযাত্রা, এম. টি. বাংলার অগ্রদূত এবং এম.টি বাংলার অগ্রগতি) বর্তমানে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক পরিমন্ডলে পণ্য পরিবহন সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে।

এছাড়াও বিএসসি এরই মধ্যে বেশ কিছু নতুন জাহাজ সংগ্রহের পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। যেমন, চীন থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে আরো ৪টি নতুন বড় জাহাজ (মাদার ভ্যাসেল) এবং আরো ৪টি মাঝারি আকারের (২টি নতুন ৪০,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন অয়েল ট্যাংকার এবং ২ টি নতুন ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ ডিডব্লিউটি সম্পন্ন বাল্ক ক্যারিয়ার সংগ্রহ) ইত্যাদি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ২টি বাল্ক ক্যারিয়ার জাহাজ সংগ্রহ করার লক্ষ্যে বিএসসি পরিচালনা পর্ষদের ৩২২তম সভার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা বলে নৌ-মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়।

কাজল/শহিদ

×