হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
গত আগস্ট থেকে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবায় যে পরিবর্তন লেগেছে, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে । সেবার মানে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ কিছুটা হলেও প্রথম ১০০ দিনে দূর করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। যাত্রীসেবায় চমক দেখিয়েছে বেবিচক। দ্রুত লাগেজ পাওয়া, প্রবাসীদের জন্য লাউঞ্জ স্থাপন, ফ্রি ফোনকল, ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থায় যাত্রীরা সন্তুষ্ট।
বিমানবন্দরে লাগেজ পাওয়া নিয়ে হয়রানি দীর্ঘদিনের অভিযোগ ছিল। গত ৫ আগস্টের পর এই ভোগান্তি অনেক কমেছে। যথাসময়ে লাগেজ পাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’ প্রবাসীদের জন্য বড় একটি উপহার। সেখানে কম মূল্যে খাবারসহ অন্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। এভাবে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা বাড়তে থাকলে দেশ-বিদেশে আরও সুনাম অর্জন করবে বেবিচক।
বেবিচক সূত্র জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরের গৃহীত নতুন ব্যবস্থায় ১৫ থেকে ৫৫ মিনিটের মধ্যে ৮৮ শতাংশের বেশি লাগেজ ডেলিভারি নিশ্চিত করা হয়েছে। ফ্লাইট আগমনের ১৮ মিনিটের মধ্যে কনভেয়ার বেল্টে লাগেজ উপস্থিত হচ্ছে। এছাড়া উন্নততর সমন্বয় ও রিসোর্স অপ্টিমাইজেশন পরিষেবাগুলোর কার্যদক্ষতা উন্নত করেছে এবং লাগেজ পড়ে থাকার ঘটনা ৯৯ দশমিক ৮ শতাংশ সাফল্যের সঙ্গে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
বেবিচক সূত্র জানায়, এ লাউঞ্জের মূল উদ্দেশ্য প্রবাসী কর্মী ও তাদের সঙ্গী বিশেষ করে যারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসেন এবং যারা প্রায়ই তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটের সময়ের আগে বিমানবন্দরে পৌঁছান, তাদের জন্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়া। নতুন ওয়েটিং লাউঞ্জে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে ডেডিকেটেড ওয়েটিং এরিয়া, শিশুযত্ন কক্ষ, পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা নামাজের জায়গা এবং সুলভ মূল্যের ক্যাফেটেরিয়া অন্যতম।
প্রবাসী রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের সঙ্গে বিমানবন্দরের কর্মীদের আচরণ নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। খারাপ আচরণের সঙ্গে বিভিন্নভাবে তারা হয়রানিরও শিকার হতেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সমাধান করেছে বেবিচক।
গত ১১ আগস্ট ১২ দফা দাবিতে প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ করে বেবিচক কর্মচারী ফোরাম। তখন দাবি আদায়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যানকে একটি স্মারকলিপিও দেন তারা। তাদের দাবির মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ছিল বিমানবন্দরে রেমিট্যান্সযোদ্ধাসহ (প্রবাসী শ্রমিক) যাত্রী সাধারণকে বিমানবন্দরে কর্মরত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী যাতে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনপূর্বক ‘স্যার’ বা ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করে।
পরে বিমানবন্দরের সব কর্মচারীকে প্রবাসী কর্মীদের সর্বোচ্চ সম্মান ও আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দিতে নির্দেশনা দেন বেবিচক চেয়ারম্যান। এছাড়া কর্মীদের প্রবাসীদের ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করতে এবং সবার জন্য ঝামেলামুক্ত পরিষেবা নিশ্চিত করতে বলেন তিনি।
২৪ ঘণ্টা হটলাইন এবং নতুন ওয়েবপোর্টাল চালু করা, যাতে যাত্রীরা সহজে সহায়তা পান এবং ১৩৬০০ হটলাইনে যে কোনো সময় কল করে অভিযোগের সমাধান করতে পারেন। ওয়েবসাইটেও আপ-টু-ডেট তথ্য পাওয়া যায়।
বিদেশফেরত যাত্রীদের যদি সঙ্গে স্থানীয় সিমকার্ড না থাকে, সেক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে যোগাযোগ করার সুবিধার্থে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়েছে। বিনামূল্যে টেলিফোন কল করা এবং যোগাযোগের সুবিধার্থে যাত্রীদের জন্য দশটি বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য টেলিফোন বুথ স্থাপন করা হয়েছে।
রাজু