সংগৃহীত ছবি।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ডঃ আ ফ ম খালিদ হোসেন এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন।
তিনি বলেন, এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে লালন করতে না পারলে ইসলামী শিক্ষা অসম্ভব হবে। এবতেদায়ী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কোন প্রতিষ্ঠান নেই,এটা একটি বৈষম্য। এবতেদায়ী শিক্ষকদের দাবি পূরণে আমি শিক্ষা মন্ত্রীকে ডিও লেটার দিবো। আশাকরি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ দাবি পূরণ করতে না পারলেও মোটামুটি কিছু কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ। আগামীর শিক্ষা পাঠ্যপুস্তক নির্ভুল করার জন্য আমরা চেষ্টা করবো। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে যাতে শিখতে পারে সে ব্যবস্থা করবো। এদেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা, ধর্ম চর্চা ও ধর্ম শিক্ষার অধিকার সাংবিধানিক অধিকার। আপনারা আপনাদের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টাকে দিন। আমি আপনাদের দিলের দাবির সাথে আমি একমত। আপনারা যাতে প্রশিক্ষণ ও পুস্তক পান সে আলোচনা উত্থাপন করবো।
"স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষক ফোরাম" এর উদ্যোগে আজ ২৩ নভেম্বর, শনিবার, বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ মিলনায়তনে "বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা: উত্তরণের পথ" শীর্ষক আলোচনা সভায় ৭ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হলেও এবতেদায়ী মাদ্রাসার প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার নাস্তিকদের দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। এই সরকার যদি জাতীয় করণ না করে তবে এগুলো কারা করবে। যে শিক্ষা ব্যবস্থা দেয়া হয়েছে এগুলোর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের চরিত্র ধ্বংস করতে চেয়েছে। কোরআন-হাদীসের শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খান বলেন, এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা শুধু নয় লাখো লাখো এবতেদায়ীর ছাত্রদেরকে উপবৃত্তি না দিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে। এই বৈষম্য দূর করা না হলে আমরা ছাত্র শিক্ষকদের বৈষম্য দূর করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে সমাবেশ আয়োজন করতে বাধ্য হবো।
জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সিনিয়র সহ সভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া বলেন, ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে এবতেদায়ী মাদ্রাসা। রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে জাতীয় করণ করতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ নজরুল ইসলাম মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাছির উদ্দিন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এ বি এম জাকারিয়া, সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক ডাঃ আবদুস সবুর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আবদুল মুমিন, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ড. আবদুস সবুর মাতুব্বর, আজাদুর রহমান, শিক্ষক নেতা আমজাদ হোসেন প্রমূখ। এতে লিখিত প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, মুহাম্মাদ মাসউদুর রহমান।
আলিয়া মাদরাসার সূতিকাগার 'স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার অস্তিত্ব রক্ষা এবং ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে বৈষম্য দূর করতে অধিকার বঞ্চিত বৈষম্যের শিকার অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবন যাপনকারী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নিম্নোক্ত দাবীসমূহ উত্থাপন করা হয়-
১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউট কর্তৃক স্ট্যাডি রিপোর্টের আলোকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতিদায়ী মাদরাসাসমূহ জাতীয়করণ করতে হবে।
২। স্বতন্ত্র এবতিদায়ী মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন-ভাতাদি/অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৪ দ্রুত বাস্তবায়নের ঘোষণা দিতে হবে।
৩। স্বতন্ত্র ইবতিদায়ী মাদরাসার পাঠদানের অনুমতির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
৪।রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত কোড বিহীন স্বতন্ত্র ইবতিদায়ী মাদরাসাগুলো মাদরাসা বোর্ডের কোডের অন্তর্ভুক্তকরণ করতে হবে।
৬। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতিদায়ী মাদরাসায় ১ জন অফিস সহায়কের পদ সৃষ্টি করা।
৭।প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ন্যায় স্বতন্ত্র ইবতিদায়ী মাদরাসার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণী খোলার অনুমোদন করে তদস্থ নাহলে শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করণ।
নুসরাত