ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সাংবাদিকদের আইন উপদেষ্টা

আইসিটির অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান থাকছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫২, ২১ নভেম্বর ২০২৪

আইসিটির অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান থাকছে

উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল

বিচারের শুদ্ধতার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য  করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য  করেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখায় বিচার বিলম্বিত হবে কি না? প্রশ্ন করা হলে ড. আসিফ নজরুল বলেন, বিচারের শুদ্ধতার জন্য আন্তর্জাতিক  অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অন্তর্বর্তী আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের বিধান রাখা হয়েছে। তবে তা খুব সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে।
আন্তর্জাতিক  অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে রাজনৈতিক দলের বিচার থেকে সরে আসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিচারের শুদ্ধতা রক্ষার জন্য রাজনৈতিক দলের ইস্যু আনা উচিত না।
বুধবার সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অধ্যাদেশ জারি হলে ট্রাইব্যুনাল চাইলে শুনানির সময় অডিও-ভিডিও রেকর্ডও রাখতে পারবে। বিদেশে বসে কেউ মানবতাবিরোধী অপরাধ করলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিতে পারবে।
তবে আইন সংশোধনের খসড়ায় রাজনৈতিক দল ও তার সহযোগী সংগঠনের অপরাধ প্রমাণ হলে ১০ বছর নিষিদ্ধের যে প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা বাদ রেখে সংশোধনী অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। বুুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনায় বলা হয়েছে, আমরা এই বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন আসলে এই আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। আমরা একদম ভদ্রভাবে, নিরপেক্ষভাবে বিচার করতে চাই। এজন্য ওই বিধান বাতিল করা হয়েছে।’ তবে সরকার চাইলে প্রচলিত আইনেই যে বিদ্যমান দল বা সংগঠন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সে কথাও আইন উপদেষ্টা বলেন।
‘জনমতের প্রতি, জনদাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই ধরনের (দল নিষিদ্ধ) কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আর থাকল না সেটা না, মানে ‘যুদ্ধাপরাধ আইনে’ থাকল না। কিন্তু অন্যান্য প্রচলিত আইন এ দেশে রয়েছে। রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে বিভিন্ন জনদাবি যদি আসে, সেটা পরে বিবেচনা করা হবে। এটা আইনের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয় না। ‘আমরা অনুভব করেছি কোনো রাজনৈতিক দল বা অন্য কোনো সংগঠন তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য যদি নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয়, যদি নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠে, আমাদের অন্যান্য আইন রয়েছে, সেই সমস্ত আইনে নিষিদ্ধ করার বিধান আছে, সন্ত্রাস দমন আইনে রয়েছে, নির্বাচনী আইনে রয়েছে, পলিটিক্যাল পার্টি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৮ এ রয়েছে। কাজেই এখানে এই বিধান নেই।’
এখন সংসদ নেই বলে উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশ হলেই সেটি আইনে পরিণত হবে। এ সময় গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।

×