‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৪’
‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) সংশোধন অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ায় সংগঠন বা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশের যে বিধান প্রস্তাব করা হয়েছিল, তা বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। তবে আরও কিছু সংশোধনী এনে করা অধ্যাদেশের খসড়াটি অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তবে সরকার চাইলে প্রচলিত আইনে বিদ্যমান দল বা সংগঠন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন অধ্যাদেশ ২০২৪’ অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
আসিফ নজরুল বলেন, উপদেষ্টা পরিষদ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১৯৬৩ সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এই আইনের বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন মহল থেকে অনেক সমালোচনা ছিল। আমরা একটি নিরপেক্ষ বিচার করতে চাই বলে প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এই সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছি।
তিনি জানান, এই আইন সংশোধনের আগে সংশ্লিষ্ট সকলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। দেশী-বিদেশী আইনজীবী ও মানিবাধিকার সংগঠনের কাছে পাঠিয়েও মতামত নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হলে এটি গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তবে উপদেষ্টা পরিষদে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েছে। তা হচ্ছে আমরা যে সংশোধনীর খসড়া করেছিলাম সেখানে সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছিল- ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজন মনে করলে কোনো সংগঠনকে শাস্তি দেওয়ার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করতে পারবে।
কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বলা হয়েছে আমরা এই বিচারকে অন্যকোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল বা কোনো সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন আসলে এই আইনকে অযথাই প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। আমরা ডিসেন্ট ও ফেয়ার ওয়েতে বিচারটা করতে চাই। এজন্য ওই প্রভিশনটা বাতিল করা হয়েছে।
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ প্রশ্নে ড. আসিফ নজরুল বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা সংগঠন তাদের অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন হয় বা সমাজে দাবি ওঠে এ বিষয়ে আমাদের অন্যান্য আইন হয়েছে। সেই সমস্ত আইনে নিষিদ্ধ করার বিধান আছে। সন্ত্রাস দমন আইনে রয়েছে। নির্বাচনী আইনে রয়েছে। ১৯৭৮ সালের রাজনৈতিক দল আইনে রয়েছে। কাজেই এই আইনে এই বিধানটা নেই দেখে আমাদের সেই সুযোগ আর থাকল না সেটা নয়। এই যুদ্ধাপরাধ বিচার আইনে থাকল না। কিন্তু অন্যান্য প্রচলিত আইনে রয়েছে। সেটার বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য হলে জনমত ও জনদাবি এলে তাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে পরে বিবেচনা করা হবে। এটা আইনে ভেতরে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয় নয়।
তিনি বলেন, এই আইনে ক্রাইম অ্যাগেইনস্ট হিউম্যানিটি, জেনোসাইডের ডেফিনেশনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন অনুমোদন দিয়েছি। রোম স্ট্যাটিউট অবলম্বন করে জেনোসাইড, মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছে সংশোধনীতে। এই আইনে অভিযুক্তদের প্রসিকিউশনে সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ভিকটিম প্রটেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান করা হয়েছে।
সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ- বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের দেশের আইনে শত শত বছর ধরে মৃত্যুদ-ের বিধান রয়েছে। নতুন করে এটা করা হয়নি। আমাদের পেনাল কোডে বহু আইনে মৃত্যুদ-ের বিধান আছে। আমরা মৃত্যুদ- বিলোপ সম্পর্কিত যে আন্তর্জাতিক কনভেনশন আছে সেখানে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী নয়। আমাদের আইনগত সংস্কৃতির সঙ্গেও এটা সংগহিপূর্ণ নয়। আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামকেও এটা স্পষ্টভাবে জানিয়েছি। আপীলের সুযোগও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন হয়েছে।
খসড়া অধ্যাদেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কিছু কিছু অপরাধের স্থল ঠিক করা ছিল বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। এখন বাংলাদেশের বাইরেও যদি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আমলযোগ্য কোনো অপরাধ সংগঠিত হয় সেগুলোও নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে বিবেচনায় নেওয়া যাবে।
একটি বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, পাবলিক হিয়ারিং হবে কি না। অনেক সময় দেখা যায় কেউ কেউ ছবি নিতে চান, কোর্ট প্রসিডিংয়ের ভিডিও অডিও এগুলো রেকর্ড করতে চান। আমরা মডার্ন হয়েছি, প্রগেসিভ হয়েছি, আলাপ-আলোচনা হয়েছে যে, কোর্টের ডিসকাশনে ছেড়ে দিতে পারি। পরবর্তীকালে রেকর্ড হিসেবে সংরক্ষণের জন্য তারা অডিও ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারে। আইনে সেই প্রভিশনটা রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক প্রয়োজনে ট্রাইব্যুনাল এগুলো রেকর্ড করতে পারবে। তবে এগুলো বাইরে সম্প্রচার হবে না। গণমাধ্যমের এটা করার সুযোগ থাকবে না।’
শেখ আব্দুর রশীদ আরও বলেন, একটা মামলার প্রসিডিং চলছে, এটা চলা অবস্থায় কোন একটা পয়েন্টে বা ছোট্ট একটা অর্ডারের বিপক্ষে সংক্ষুব্ধ কেউ আপিল করতে চাইতে পারে যে, এ অর্ডারটা বা অংশটুকু আমরা মানি না। সেই অন্তর্র্বর্তী আপিল তারা করতে পারবেন, সেই প্রভিশন অধ্যাদেশে যুক্ত হয়েছে। ৩০ দিনের মধ্যে সেটা নিষ্পত্তি করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের আওতাধীন অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩’ প্রণয়ন করা হয়। রোম স্ট্যাটিউট অব দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিন্যাল কোর্টের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা আনা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রচলিত বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং এই আইনের বিচারকাজ নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন কর্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সুপারিশের আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন এর অধিক সংশোধন সমীচীন ও আবশ্যক।
এ প্রেক্ষাপটে আইন ও বিচার বিভাগ আন্তর্জাতিক অপরাধগুলোর সংজ্ঞা যুগোপযোগীকরণ, অপরাধের দায় নির্ধারণ, অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ ধারণ ও সম্প্রচার, বিদেশী কাউন্সেলরের বিধান, বিচারকালে অভিযুক্তের অধিকার, অন্তর্র্বর্তীকালীন আপিল, সাক্ষ্যের গ্রহণযোগ্যতা ও প্রাসঙ্গিকতা সংক্রান্ত বিধান, তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক তল্লাশি ও জব্দ করার বিধান, পর্যবেক্ষক, সাক্ষীর সুরক্ষা, ভিকটিমের অংশগ্রহণ ও সুরক্ষার বিধান সংযোজন করে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংশোধিত অধ্যাদেশ অনুমোদন ॥ ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ত্রয়োদশ বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানবাধিকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন এবং মানবাধিকার যথাযথভাবে নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করা হয়। ওই আইনের ধারা ৫ অনুযায়ী একজন চেয়ারম্যান, একজন সার্বক্ষণিক সদস্য এবং ৫ জন অবৈতনিক সদস্য সমন্বয়ে মানবাধিকার কমিশন গঠনের বিধান রয়েছে। বিগত ৭ নভেম্বর, ২০২৪ তারিখে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, একজন সার্বক্ষণিক সদস্য ও ৪ জন অবৈতনিক সদস্য তাদের স্বীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন। মানবাধিকার কমিশনের অপর একজন অবৈতনিক সদস্য গত ২২ আগস্ট পদত্যাগ করেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা পদত্যাগ করায় কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রদানের জন্য আইনের ধারা ৭ এর অধীন জাতীয় সংসদের স্পিকারের সভাপতিত্বে একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রয়েছে। ওই বাছাই কমিটিতে জাতীয় সংসদের স্পিকার কর্তৃক মনোনীত একজন সরকার দলীয় এবং অন্য একজন বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য মনোনয়নের বিধান রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে যাওয়ায় এবং সংসদের স্পিকার পদত্যাগ করায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের জন্য বাছাই কমিটি সংক্রান্ত বিধান সংশোধন করা প্রয়োজন।
ওপরে বর্ণিত প্রেক্ষাপটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগের জন্য বাছাই কমিটির সভাপতির অবর্তমানে বা অনুপস্থিতিতে কমিটির সভায় উপস্থিত সদস্যদের সম্মতিতে যে কোনো সদস্য যাতে সভায় সভাপতিত্ব করতে পারেন এবং কেবল কোনো সদস্য পদে শূন্যতা বা বাছাই কমিটি গঠনে ত্রুটি থাকার কারণে যাতে এর কোনো কার্য বা কার্যধারা অবৈধ না হয় বা সেই সম্পর্কে কোনও প্রশ্নও উত্থাপন করা না যায়— সে সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে।
মুজিববর্ষ উদ্যাপনের বরাদ্দ বাতিল ॥ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ বা মুজিববর্ষ উদ্যাপনের জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যে বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল, সেটি বাতিল করেছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। বুধবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকের বরাত দিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানায়।
জানা গেছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মুজিববর্ষ পালনের বিষয়টি উঠে আসে। সেখানে মুজিববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০, ২০২০-২১, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সসব মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও আওতাধীন দপ্তর/সংস্থা, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জাতীয় সংসদ, বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মোট এক হাজার ২৬১ কোটি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় সম্পর্কে উপদেষ্টা পরিষদ অবহিত হন। বৈঠকে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ সংক্রান্ত বাজেট বরাদ্দ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রথমবার সচিবালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ॥ প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে গেলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর আগে প্রধান উপদেষ্টাকে সচিবালয়ে অভ্যর্থনা জানান আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এর আগে এই সরকারের এই ধরনের বৈঠকগুলো রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
সচিবালয় এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকটি সচিবালয়ের ছয় নম্বর ভবনের ১৩ তলায় অবস্থিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানায়, এই কক্ষটি মূলত মন্ত্রিসভার বৈঠকের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল, তবে দীর্ঘদিন ধরে এখানে মন্ত্রিসভার কোনো বৈঠক হয়নি। সাধারণত সচিব পর্যায়ের বৈঠক বছরে দু-একবার এখানে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টার আগমন উপলক্ষে কক্ষটি ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করা হয়।
অতিরিক্ত ও ডেপুরি অ্যাটর্নি নিয়োগে ‘আইন কর্মকর্তা অধ্যাদেশ’ অনুমোদন ॥ ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার (অ্যামেন্টমেন্ট) অর্ডিন্যান্স, ২০২৪’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। বুধবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ত্রয়োদশ বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্য অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগের মাধ্যমে বিদ্যমান অ্যাটর্নি সার্ভিসকে শক্তিশালী করা আবশ্যক। এ উদ্দেশ্য পূরণে ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স অর্ডার ১৯৭২’ এর অধিক সংশোধন সমীচীন ও আবশ্যক।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮(৩)-এর অধীন সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং অভিজ্ঞ, দক্ষ ও যোগ্য অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগে আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে ‘দ্য বাংলাদেশ ল অফিসার্স (অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স ২০২৪’ শীর্ষক অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা হয়।
ছাত্ররা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে- উপদেষ্টা মাহফুজ ॥ একই সংবাদ সম্মেলনে কোনো ধরনের উস্কানিতে আন্দোলন ও সংঘাতে না জড়িয়ে ছাত্ররা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।
তিনি বলেন, আমাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি সেটি হলো- ছাত্রদের নেতৃত্বে সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে একটা গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। ছাত্রদের মধ্যে এখনো অনেক ধরনের আকাক্সক্ষা আছে, অনেক ধরনের দাবি-দাওয়া আছে। দাবি-দাওয়ার ক্ষেত্রে সম্মান রাখছে, যে আপনারা আসেন কথা বলেন। কথা বলে আমরা এগুলোর সমাধান করতে পারি। অনেকগুলো বিষয় কিন্তু দেখেছেন যে একটা সমাধানের দিকে যাওয়া যায়। সরকার কথা শুনছে। সরকার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।