উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিষদে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের জন্য চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা যখন সরকারের পক্ষ থেকে আমরা বলি তখন রাজনৈতিক দলগুলো সেটি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গণতন্ত্রের কথা বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার নানা চক্রান্ত চলছে।
সোমবার ( ২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ‘নবীন চোখে গণঅভ্যুত্থান ও আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় আসিফ মাহমুদ বলেন, এই গণঅভ্যুত্থান আংশিক সফল হয়েছে। কারণ আমাদের এক দফা দাবির মধ্যে ছিল শেখ হাসিনার পতন ও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরোধ। কিন্তু এখনো সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা সম্পূর্ণরুপে বিরোধ করা সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দূতাবাস চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে যে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা যাবে না কিংবা নির্বাচন থেকে দূরে রাখা যাবে না। অথচ ১৯৪৫ সালে জার্মানির ফ্যাসিস্ট নাৎসি পার্টিকে নিষিদ্ধ করা হয় এবং এখনো তারা নিষিদ্ধ রয়েছে। সেখান থেকেই বোঝা উচিত আওয়ামী লীগের পরিণতি কি হওয়া উচিত।
গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর প্রক্রিয়া চলামান রয়েছে উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ডাক্তারদের পরামর্শক্রমে আহতদের দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এক্ষেত্রে আহতদের অনেকেরই পার্সপোর্ট না থাকা ও অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিছু জটিলতা রয়েছে। এছাড়া পিজি হাসপাতালের সঙ্গে ভিআইপিদের চিকিৎসার জন্য যে সুপার স্পেশালাইজড চালু করা হয়েছিল সেটিকে শুধুমাত্র জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের বিশেষভাবে চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আয়োজনের ব্যাপারে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ফ্যাসিবাদ পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তাই গণতান্ত্রিক চর্চার শুরুটাও ক্যাম্পাসগুলো থেকে হওয়া উচিত। জানুয়ারি – ফেব্রুয়ারীর মধ্যে সকল ক্যাম্পাসগুলো ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে আমরা ক্যাবিনেটে আলোচনা করব।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শিক্ষার্থীরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করে বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন এবং জুলাই-আগষ্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শামীমা সুলতানা লাকি, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহী, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন রুনু। আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম মাহফুজুর রহমান ও প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম প্রমুখ। আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য ফয়সাল মাহমুদ শান্ত।
ইসরাত