ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি

সড়ক ও রেলপথ অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে চরম ভোগান্তি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সড়ক ও রেলপথ অবরোধ শিক্ষার্থীদের, যানজটে চরম ভোগান্তি

.

কোনো ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেছেন মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া রাজধানীতেও যানজট, অচলাবস্থা দেখা দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন। তাদের এ কর্মসূচির কারণে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মহাখালী থেকে সাতরাস্তা ও মহাখালী থেকে ফার্মগেট রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় মহাখালী ক্রসিংয়ে ট্রেন থামানোর জন্য হামলা করা হয়। এ সময় ইটপাটকেল ছোড়ায় ট্রেনের এক শিশুসহ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়। বিকেল চারটায় তারা রাজপথ ছেড়ে যাওয়ার পর শুরু হয় ট্রেনসহ অন্যান্য যান চলাচল। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনশনে বসেন। একই সময়ে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত কলেজের ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে রাতেও মহাখালী আমতলী মোড় থেকে গুলশান-১ অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ডাকা হয়। পরে বৈঠক করতে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যান। ১২ সদস্যের এ দলে ছিলেন মেহেদী হাসান, মাহমুদুল হাসান, জাহাঙ্গীর সানি, আমিনুল, নুর উদ্দিন জিসান, কাউসার আহমেদ, মোশারফ হোসেন, তোহা, নুর মোহাম্মদ, হাবিব উল্লাহ রনি, আব্দুল হামিদ ও নিরব হোসেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিন দফা দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজ থেকে তিতুমীর কলেজকে পৃথক (আলাদা) করতে হবে। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে কমিশন গঠন করতে হবে। তিতুমীরকে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলনের একপর্যায়ে দুপুরে মহাখালী রেলক্রসিং অবরোধ করেন তারা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দুটি আন্তঃনগর ট্রেন থামিয়ে দেন এবং সেগুলোতে হামলা চালান। এতে শিশুসহ দুই ট্রেনের বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। বেলা ১১টার পর থেকে মহাখালী রেলগেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শত ছাত্র-ছাত্রী। তারা এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দেন।
হঠাৎ কেন এ ধরনের কর্মসূচি জানতে চাইলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যতম ওয়াহিদ ইসলাম অনিক সাংবাদিকদের বলেন, এটা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। বেলা ১১টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত আমরা অবরোধ করব বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই ঘোষণা অনুযায়ী, দাবি আদায়ে আমরা অবরোধ করছি। তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে কমিশন গঠন না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, কোনো আগাম ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করায়  নগরবাসীর ওপর নেমে আসে সীমাহীন দুর্ভোগ ও কষ্ট। বেলা বারোটার সময় সরেজমিনে দেখা যায়, গুলশান-মহাখালী, আমতলী, বনানী, বিমানবন্দর ও সাতরাস্তা এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।  তার প্রভাব পড়ে বিমানবন্দর থেকে শুরু করে সদরঘাট গাবতলী গুলিস্তান ও সায়েদবাদ পর্যন্ত। বিশেষ করে মহাখালী ও বনানী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষা চলায় চরম বিপাকে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে এগারোটায় বিএফ শাহীন স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কজন পরীক্ষার্থীকে গেটের সামনে অপেক্ষা করতে। পরীক্ষা শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টা পর পৌঁছানোয় তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছিল না। পরে অনেক অনুরোধ করে তারা প্রবেশাধিকার পায়। বেলা আড়াইটায় যখন পরীক্ষা শেষ হয়, তখন দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও তাদের জন্য নিজস্ব গাড়ি ঠিক সময়ে সেখানে পৌঁছতে পারেনি। এতে তাদের স্কুলের সামনেই অনেকক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়। সামনের সড়কে যানবাহনের সারিবদ্ধ জটলার কারণে স্কুল থেকে বের হতেও বেগ পেতে হয়।
ফারদিন নামে অষ্টম শ্রেণির পরীক্ষার্থী স্কুল থেকে বেরিয়ে দেখে তার গাড়ি আসেনি। ফোন করলে চালক জানান, গাড়ি আটকা পড়েছে কাকলীতে। নড়ার কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে ফারদিনকে হেঁটে কাকলীর দিকে যেতে দেখা যায়।
আরকান হাবিব অন্ত নামের অপর এক শিক্ষার্থীকেও  একই কষ্ট ভোগ করতে হয়। পরীক্ষা শেষে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত দেহে ফিরতে হয়েছে বাসায়। এমন শত শত শিক্ষার্থীকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। বিকেলে অফিস টাইম শেষ হওয়ার পর একসঙ্গে অনেক যাত্রী রাস্তায় বের হওয়ায় যানজটের তীব্রতা আরও বেড়ে যায়। এ সময় দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকের সড়কের দুই পাশেই যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ যানবাহনে যাত্রীরা বসে থেকে আর উপায় না পেয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা হন। এছাড়া মহাখালী উড়াল সড়ক এবং নিচের সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
অন্যদিকে মহাখালীর এ যানজট ছড়িয়ে পড়ে কাকলী-বনানী হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড পর্যন্ত। মহাখালী থেকে সাতরাস্তা হয়ে মগবাজার কিংবা মৌচাক যাওয়ার রাস্তায়ও ব্যাপকভাবে যান চলাচল ব্যাহত হয়। বিকেল সাড়ে চারটার পরও এসব এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ভুক্তভোগী পথচারীরা বলেন, এভাবে রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষার্থীরা যদি আগাম ঘোষণা দিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি দিত তাহলে অন্তত বিকল্প ব্যবস্থা করে এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবার সুযোগ ছিল।
এ সময় মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে বাসে প্রায় দেড ঘণ্টা ধরে বসে থাকা যাত্রী মো. সোহাগ বলেন, রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থা মাসখানেক ধরে এমনি খুব বাজে। এক-দেড় ঘণ্টা হাতে সময় নিয়েও নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছা যাচ্ছে না। আবার এখন দেখা যাচ্ছে কোনো না কোনো বিষয় নিয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি নিয়ে আন্দোলন করুক, কিন্তু আমাদের কেন তারা রাস্তায় জিম্মি করে রেখে রাখছে।
বেলা আড়াইটার সময় জাহাঙ্গীর গেটে আটকে পড়া যাত্রী আজিজুল হক বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমার গাজীপুর যাওয়ার কথা। সকাল থেকে আন্দোলন হচ্ছে দেখে বিকেলের দিকে বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু এখনো গাড়ির চাকা ঘুরছে না। এভাবে চলতে থাকলে তো এ শহর অচল হয়ে পড়বে।
সরেজমিনে দেখা যায়, অবরোধকালে মহাখালী থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকের সড়কের উভয়পাশে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে কেউ কেউ হেঁটে গন্তব্যের পথে রওনা হন। তাদের কারও কারও হাতে মালপত্রের ভারী বস্তা, ব্যাগ দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার সঙ্গে থাকা বয়স্ক স্বজনদের ধরে ধরে কিংবা শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে হেঁটে যান।
অবরোধের কারণে সৃষ্ট ভোগান্তি নিয়ে অনেক সাধারণ মানুষকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। তাদের মন্তব্য- শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক হলে সরকারের কাছে গিয়ে তা পেশ করুক শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এভাবে বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ রাস্তাঘাট বন্ধ করে, মানুষকে জিম্মি করে, পেরেশানি দিয়ে কেন আন্দোলন করা হচ্ছে। এটা কোন ধরনের স্বাধীনতা?
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা থেকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে স্ত্রী আয়েশা বেগমকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য এসেছিলেন সাইদুর রহমান। স্বামী-স্ত্রী দুজনই বয়স্ক। বেলা সোয়া একটার দিকে তারা মহাখালী উড়ালসড়কের নিচে ময়মনসিংহগামী বাসের অপেক্ষায় ছিলেন। দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে আয়েশা বেগম ফুটপাতে বসে পড়েন। তখন তারা নানাভাবে এই ভোগান্তির কথা প্রকাশ করেন।
আন্দোলনকারীরা মহাখালী রেলগেট এলাকার রেলপথের পাশাপাশি বিমানবন্দর সড়কের ঢাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অংশও অবরোধ করেছিলেন। মহাখালী থেকে বনানী যেতে বিআরটিএর প্রধান কার্যালয়-সংলগ্ন ইউটার্ন এলাকায়ও তারা অবস্থান নিয়েছিলেন। এ ছাড়া মহাখালী থেকে গুলশান যাওয়ার সড়ক এবং মহাখালী উড়ালসড়ক হয়ে চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় নামার অংশের সড়কও তারা অবরোধ করেছিলেন।
মহাখালী ও আশপাশের এলাকার যানজট পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের মহাখালী জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. জুনায়েদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকেই মহাখালী ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। যদিও বিকেল চারটার দিকে শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে চলে যান। কিন্তু রাস্তায় গাড়ির চাপ রয়েছে।
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ শেষে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় পর ঢাকা থেকে সারা দেশে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এ বিষয়ে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, মহাখালীতে তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা উপকূল এক্সপ্রেসে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটে। ফলে পরবর্তী সময়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা স্বার্থে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে বিকেল ৪টার পর ঢাকা থেকে ট্রেন চলাচল ফের শুরু হয়।
তিনি বলেন সোমবার প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনই ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুর ছেড়ে গেছে। লোকাল ও কমিউটার ট্রেনগুলোর ক্ষেত্রে সেই সময়টা একটু বেশিই ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পরই বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এ ট্রেন দুপুর ১টা ৪৩ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। অবরোধের কারণে দিনভর যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নিরুপায় অনেক যাত্রী ট্রেনের অপেক্ষায় কমলাপুরে বসেছিলেন দিনভর।
আবার অনেকে স্টেশনের পাশেই বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করেছেন। কেউ বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে শিডিউল বিপর্যয় হলেও কোনো ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়নি। এ বিষয়ে রেলওয়ে কমান্ড্যান্ট মো. শফিকুল ইসলাম জানান, মহাখালীতে ট্রেনে হামলার ঘটনায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এখনই কোনো মামলা দায়ের করবে না।
পুলিশ জানিয়েছে, বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেন। মিছিলটি আমতলী মোড় হয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহাখালী রেল ক্রসিং এলাকায় অবস্থান নেয়। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসা আন্তঃনগর ট্রেন উপকূল এক্সপ্রেস শিক্ষার্থীদের অবরোধ উপেক্ষা করে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের দিকে যাওয়ারর সময় হামলার শিকার হয়। ট্রেনটি শিক্ষার্থীরা থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ঢিল ছুটতে শুরু করেন। এ সময় নারী-শিশুসহ বেশ কজন আহত হন। পরে ট্রেনটি গতি কমিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খল আন্দোলনের কারণে মহাখালী রেল ক্রসিং এলাকায় বড ধরনের দুর্ঘটনায় ঘটতে পারত। এতে শত শত শিক্ষার্থীসহ অনেক সাধারণ মানুষ নিহত হওয়ারও আশঙ্কা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের বিধিনিষেধ না মেনে রেললাইনের ওপর হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে যান এবং আন্দোলন করতে থাকেন। এ সময় রেললাইন দিয়ে আসা দুই আন্তঃনগর ট্রেন তড়িঘড়ি করে থামাতে বাধ্য হন চালকরা। চালকরা যদি সতর্কতার সঙ্গে ট্রেন না থামাতেন তাহলে মহাখালীতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
এ বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, মহাখালী রেল ক্রসিংয়ের অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা রেল ক্রসিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছেন। তারা ট্রেন থামিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছেন।

×