.
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। দ্রব্যমূল্যের জন্য সিন্ডিকেট একটা বড় সমস্যা উল্লেখ করে বিষয়টি সরকার নিবিড়ভাবে তদারকি করছে বলেও তিনি জানান।
রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অগ্রগতি
বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, আপনারা জানেন যে, তিন মাস আগে আমরা কোন অবস্থায় ছিলাম, এখন কোন অবস্থায় আছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তবে যে পরিস্থিতিতে আমরা সরকারের দায়িত্ব পেয়েছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একটা ভঙ্গুর অবস্থায়, পলাতক অবস্থায় ছিল। সেই অবস্থা থেকে এখন দৃশ্যমান পরিবর্তন হচ্ছে ও সামনের দিনগুলোতে রিক্রুটমেন্ট এবং যেসব ভেহিকেল খোয়া গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেগুলো সংস্কারের কাজ চলমান আছে।
দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে সিন্ডিকেট একটা বড় সমস্যা এবং আপনারা জানেন যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একজন নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি যেহেতু ক্লোজলি বিষয়গুলো দেখছেন এবং ওয়ান বাই ওয়ান যে বিষয়গুলোÑ যেমন আলুর দাম বেড়ে গিয়েছে। আবার শাক-সবজির দাম বাড়ছে, যদিও আমাদের সাপ্লাই বেড়েছে তার পরেও দাম বাড়ছে। সেগুলো তিনি খুব ক্লোজলি মনিটর করছেন। আমাদের যে টাস্কফোর্স ছিল, সেই টাস্কফোর্স কিন্তু এখনো কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় জরিমানা করছে এবং মনিটর করছে। আমরা কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত যেন পণ্য পৌঁছে যায়, সে জন্য বিভিন্ন ফসলজাত পণ্য উদ্যোক্তাদের সাপোর্ট দিচ্ছি। প্রত্যেকটি বাজারের একটি কর্নারে কৃষি বাজার করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেটা বাস্তবায়নের পথে আছে। টিসিবির কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। আশা করি, সমস্যা হলে আমরা সমাধান করতে পারব।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, আরেকটা বিষয় আমি বলতে চাই, যখন উপদেষ্টা পরিষদে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে নেওয়া হয় তখন কনফিউশন ছিল যে, সদ্য গ্রাজুয়েট হয়ে আমরা আসলে কতটুকু মন্ত্রণালয় কিংবা সরকারে রান করতে পারব। আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ ছিল এবং চ্যালেঞ্জ এখনো আছে। আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জটা শুধু নিজেদের প্রমাণ করা নয় আমাদের চ্যালেঞ্জটা এই জেনারেশনকে প্রমাণ করার জন্য যে, আমরা এই তরুণ প্রজন্ম শুধু ডেস্ট্রাক্টিভ ওয়েতে (ধ্বংসাত্মক উপায়) গিয়ে একটা ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন ঘটাতেই পারি না, আমরা কনস্ট্রাক্টিভ ওয়েতে (গঠনমূলক উপায়) দেশ পুনর্গঠনে কাজ করতে পারি এবং আমরা দেশকে পলিসি লেভেলে (নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে) কিছু ভালো উপহার দিতে পারি।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, সেই কাজের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে চাই যে, আমাদের প্রজন্মে যারা আছে, আপনারা জানেন প্রাইভেট সেক্টরে আমাদের প্রজন্ম খুব ভালো করছে। সেখানে পরিবর্তনটা খুব দ্রুত হয়েছে। সেখানে যে যোগ্যতাতে নিয়ে আসা হয় কিন্তু পাবলিক সেক্টরে অনেক সময় যায় তরুণদের অংশগ্রহণ খুব কম। এটা একটা সুযোগ তরুণ প্রজন্মের নিজেদের প্রমাণ করার, বিভিন্ন সেক্টরে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে। সুযোগটা যেমন আমাদের জায়গা থেকে আমরা এটা করার চেষ্টা করছি এবং তরুণ প্রজন্মের সবাই সেটা করার চেষ্টা করবে যার যার জায়গা থেকে।
৮৬ হাজার ২৭৭ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ॥ অন্তর্বর্তী সরকার গত ১০০ দিনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনে ৮৬ হাজার ২৭৭ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।
সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া সচিব জানান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতায় কর্মপ্রত্যাশী যুবকদের সরকারি-বেসরকারি কর্মে নিয়োজিত করা এবং আত্ম-কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে দুই লাখ ৬৪ হাজার ৮০ জনকে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিগত ১০০ দিনে ১৯ হাজার ৪৫২ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমানে ৫২ হাজার ১১৫ জন প্রশিক্ষণরত।
তিনি বলেন, বিগত ১০০ দিনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, বিপিএসসি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় রাজস্ব ও প্রকল্প খাতে নতুন ৮৬ হাজার ২৭৭ জনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে রাজস্ব খাতে দুই হাজার ৪৬৮ জন এবং প্রকল্প খাতে (আত্মকর্মী ও উদ্যোক্তা) ৮৩ হাজার ৮০৯ জন। দুই বছরে সরকারিভাবে পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক সচেতনতাবিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্সে মোট সাতটি ব্যাচে দুই হাজার ১০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭১০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের সহায়ক পুলিশ হিসেবে ২৩১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং অবশিষ্ট নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।