শহীদ সৈকতের রক্তাক্ত শার্ট
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে শহীদ মাহামুদুর রহমান সৈকতের পিঠাপিঠি বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি (২৩)। ভাই চলে গেলেও রেখে গেছে তার স্মৃতিসমূহ। এর মধ্যে সবচেয়ে মর্মস্পর্শী ও সংবেদনশীল স্মৃতি শহীদ ভাইয়ের রক্তে ভেজা শার্ট। তবে এতদিনে শুকিয়ে গেছে সব রক্ত,থেকে গেছে ছোপ ছোপ দাগ। ভয়ানক সব স্মৃতির দাবিদার এই শার্টকে আগলে রেখেছেন সৈকতের পরিবার। রোদ উঠলেই শুকাতে দেন এই শার্ট যেন নষ্ট না হয়ে যায় সৈকতের শেষ স্মৃতি। সম্প্রতি সেবন্তি ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন।
এ নিয়ে সৈকতের বোন সেবন্তি তার ফেসবুক দেয়ালে লিখেন,
যেইদিন ই প্রখর রোদ উঠে,আম্মু আমারে মনে করায়ে দেয় যে ভাই এর রক্তমাখা কাপড়গুলো রোদ এ দিয়ে হবে।আমিও বাধ্য মেয়ের মত রোদে দিয়ে আসি।অনেক গন্ধ আসে কাপড়গুলো থেকে,গা গুলানো গন্ধ।তারপরেও নিজ হাতে ধরে মেলে দিয়ে আসি সেগুলো,এত আপন লাগে গা গুলানো গন্ধটা।মনে হয়,থাক,আমার ভাই এর ই তো রক্ত!!
এমন দিন আসবে জীবনে কখনো ভাবসিলাম?
-১২.১১.২৪
উল্লেখ্য, ১৯ বছর বয়সী মাহামুদুর রহমান সৈকত শহিদ হন ১৯ জুলাই। ২০০৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তার জন্ম। দুই বোনের একটি মাত্র ছোট ভাই। সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এবার বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে অনার্সে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে বেলা ৩টা ৩৭ মিনিটের দিকে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মাহামুদুর রহমান সৈকত। গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গে সৈকত রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন।পরে আন্দোলনকারীরা ধরাধরি করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার পরিবার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে সৈকতের রক্তাক্ত লাশ পেয়েছিলেন।
নাহিদা