ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১

তথ্য উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতিতে সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা থাকেন

জবি শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সচিবালয়ে বৈঠক আজ

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ১১ নভেম্বর ২০২৪

জবি শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সচিবালয়ে বৈঠক আজ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবিতে সোমবার সচিবালয়ের সামনে সড়ক অবরোধ করেন

জবি সংবাদদাতা জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আজ সচিবালয়ে বৈঠক করা হবে। সেখানেই তাদের দাবি নিয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সচিবালয়ের মূল ফটক থেকে সরে যায় শিক্ষার্থীরা।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি নিয়ে সোমবার দুপুর ১২টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা শুরু করেন। তাদের কর্মসূচি ছিল শিক্ষা সচিবের কাছে এসব দাবি-সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া। কিন্তু তখন সচিব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা না করায় সচিবালয়ের মূল ফটকের সামনে রাস্তার এক পাশে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা সাড়ে তিনটায় তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সচিবালয় থেকে বেরিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সচিবালয়ে সচিব শিক্ষার্থীদের অপমান করেছে এই প্রসঙ্গে বলেন, সচিব ও সংশ্লিষ্টরা যারা শিক্ষার্থীদের অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছে এর জন্য সে ও সংশ্লিষ্টরা ক্ষমা চাইবে।
এরপরই শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ভেতরে যায়। সেখানে শিক্ষাসচিব ও উপদেষ্টা নাহিদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের ১২ সদস্য সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেলাল আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহম্মেদসহ আরও তিনজন শিক্ষক ছিলেন।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে সহযোগী অধ্যাপক নাসির সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তিন দিন সময় চাওয়া হয়। বলা হয় তিন দিন পর তারা বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিব ও তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও থাকবেন।
নাসির উদ্দিন আরও বলেন, আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যার কথা তুলে ধরেছি। সমস্যা সমাধানের রূপরেখা প্রণয়নে দুপুর ১২টায় মিটিং রাখা হয়েছে। কীভাবে এবং কোন প্রক্রিয়ায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা যায় তার রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দ্রুত হল নির্মাণ এবং বর্তমান ক্যাম্পাসে আরও একাডেমিক ভবন নির্মাণের বিষয়েও কথা বলা হয়েছে। এছাড়া অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান বিষয়ক পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
এর আগে বিকেল চারটার দিকে আন্দোলনের সংগঠক রাইসুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের পক্ষে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করে দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষাসচিব দেখা না করায় সচিবালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণে সুস্পষ্ট ঘোষণা না দিলে শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-১. স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ কর্মকর্তাদের হাতে এই দায়িত্ব দিতে হবে; ২. শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরিত হয়েছে; ৩. অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা নিতে হবে এবং পুরনো ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; ৪. সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণা করা পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ৫. বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।

 

×