.
কর্মসূচি ঘোষণা করলেও জিরো পয়েন্টের নূর হোসেন চত্বরে দেখা মেলেনি আওয়ামী লীগের। সকাল থেকে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ ছাত্র-জনতা সেখানে অবস্থান নেন। আবশ্য আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন সমর্থককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিএনপির নেতাকর্মী ও ছাত্র-জনতা। মারধরে আহত ৫ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে এবং আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের নির্দেশনা বাস্তবায়নকারীসহ ৫০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জনিয়েছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকাল থেকে গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। ঢাকাসহ সারাদেশে মোতায়েন করা হয়েছে ১৯১ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একই স্থানে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চ ‘গণজমায়েত’ গড়ে তুলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। মঞ্চ থেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন সমন্বয়করা। এদিকে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের অবস্থানের ফলে সপ্তাহের প্রথম দিন রবিবার সকাল থেকে গুলিস্তান এলাকায় যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে।
এতে এই এলাকা দিয়ে চলাচলকারী মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। গাড়ি থেকে নেমে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছেছেন। আবার অনেকে রিক্সাযোগে পাড়ি দিয়েও পড়েছেন আরও বিপাকে। এমন কর্মসূচিতে নগরীর বিশৃঙ্খলাপূর্ণ এলাকাটি আরও বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়েছে।
পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির ফলে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা। মঞ্চের সামনে উপস্থিত হন কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা। ছাত্র-জনতা দখলে নেন পুরো জিরো পয়েন্ট এলাকা। আর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মী। সকাল থেকেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে শুরু করেন বিএনপির ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া গুলিস্তান এলাকায় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা। তবে বিকেল ৩টায় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি থাকলেও নির্ধারিত সময়ে তাদের দেখা মেলেনি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে আওয়ামী লীগের ১২ জন নেতাকর্মীকে গুলিস্তান এলাকায় আসতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে ৯ জন পুরুষকর্মী গণপিটুনির শিকার হন। মারধরের পর তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ৩ জন ছিলেন নারীকর্মী। তারা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এলাকায় এসে আবার চলে যান।
আগ থেকেই সেখানে সাঁজোয়া যান ও জলকামানের গাড়ি নিয়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ সদস্যরা। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও আওয়ামী লীগকে কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। ফলে রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
তবে আওয়ামী লীগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির ডাকা কর্মসূচির কারণে দুপুর থেকেই কিছুটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি ছিল গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকায়। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দলসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগান দেন। এ সময় আওয়ামী লীগের নারী কর্মী সন্দেহে দুই নারীকে আটক করেন বিএনপি ও অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। প্রথমে তাদের মারধর করা হয়, পরে পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। কোনো উত্তর না দিলে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জিরো পয়েন্ট এলাকায় আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেশ কয়েকজনকে বেধড়ক পেটাতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের পোশাক খুলে ও ছিঁড়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে জিরো পয়েন্ট এলাকায় জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল দ্রুত মিছিল করে পালিয়ে গেলেও একজনকে আটক করা হয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপস্থিত ছাত্র-জনতা ওই ব্যক্তিকে মারধরের চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ বাধা দিলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে আটক ব্যক্তিকে পুলিশের ব্যারিকেডের মধ্য দিয়ে সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও অবস্থান নেন।
ছাত্র-জনতার মারধরে আহত হয়ে ৫ জন ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরা হলেনÑ রাজু আহমেদ মিরান (৫০), হৃদয় (২৫), রাসেল হায়দার (৪২), রাকিব (২৩) ও মোহাম্মদ আলী (৩৫)। দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন।
পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (অমিত বিশ্বাস) জানান, গুলিস্তান স্টেডিয়ামের পাশে আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগান দেওয়ায় ছাত্র-জনতা মিরান ও হৃদয় নামে ওই দুজনকে গণধোলাই দেন। পরে পুলিশে সোপর্দ করে। তখন চিকিৎসার জন্য তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তবে তারা শঙ্কামুক্ত। চিকিৎসা শেষে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হবে।
বেলা সাড়ে ৩টার দিকে গুলিস্তান নূর হোসেন চত্ব¡রে আওয়ামী লীগ সমর্থক রাকিব জয়বাংলা স্লোগান দিলে বৈষমবিরোধী ছাত্ররা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে গণপিটুনি দেন। পরে শাহবাগ থানার এসআই হারুন অর রশিদ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
একই স্থানে গণধোলাইয়ের শিকার হয় রাসেল হায়দার। তিনিও আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগান দেওয়ায় গণধোলাইয়ের শিকার হন। পরে শাহবাগ থানার এসআই রায়হান তাকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসেন।
গুলিস্তান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অফিসের সামনে মারধরের শিকার হন মোহাম্মদ আলী। তিনি দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। পেশাগত কাজে ভিডিও করার সময় মারধরের শিকার হয়েছেন বলে তিনি নিজে দাবি করেছেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের নির্দেশনা বাস্তবায়নকারীসহ ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে ডিএমপি।
ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান জানান, সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপে তার দলের নেতাকর্মীদের দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টের ছবি ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ব্যবহার করে অবৈধ মিছিল-সমাবেশের মাধ্যমে সেই ছবি ও প্ল্যাকার্ড ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেগুলো ভাঙচুর ও অবমাননার ফুটেজ সংগ্রহের নির্দেশনা দেন। বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টার অংশ হিসেবে তারা এ অপতৎপরতার পরিকল্পনা করেছেন।
ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, শনিবার ও রবিবার দুপুর পর্যন্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এ পর্যন্ত এই কুচক্রী মহলের ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ উস্কানিমূলক পোস্টার, ছবিসহ প্ল্যাকার্ড ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী মহলের যে কোনো চক্রান্ত রুখে দেওয়ার জন্য তৎপর রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, যোগ করেন ডিএমপির এই কর্মকর্তা। এসব অপকর্মের উস্কানিদাতা, অর্থ জোগানদাতা ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান ডিসি তালেবুর রহমান।
মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. শাহরিয়ার আলী বলেন, মতিঝিল ও পল্টন এলাকায় ১৫ জনকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে জনতা। তাদের থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রে যোগসাজশ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে আগে থেকেই সতর্ক অবস্থান ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুরো জিরো পয়েন্ট, গুলিস্তান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ছিল সাজোয়া যান, এপিসি, জলকামান।
এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১৯১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করার কথা জানিয়েছেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম। সেনাবাহিনীর একাধিক গাড়ি ওই এলাকায় টহল দিতে দেখা গেছে। বিজিবির সদস্যরাও সচিবালয়সহ আশপাশের এলাকায় সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিএনপি ও ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতাকর্মীর ওপর চড়াও হন।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, নগরীর শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য ডিএমপি বদ্ধপরিকর। সমাবেশের নামে কাউকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, কেউ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির চেষ্টা করলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এ নিয়ে আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা রয়েছে। ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিচারের দাবিতে জিরো পয়েন্ট মোড়ে এক গণজমায়েত মঞ্চ থেকে বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেন, বিপ্লবী ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আওয়ামী লীগ কোথাও মাথা তুলতে পারবে না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ নেতা বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষকে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা করল। ২ লাখ মানুষকে রক্তাক্ত করল। এর বিচার হওয়া উচিত কি না? এই শেখ হাসিনা প্রত্যেকটি হত্যাকা-ের হুকুমদাতা, তার বিচার হওয়া উচিত কি না? আমাদের বীর যোদ্ধা যারা এই অভ্যুত্থানে রক্তাক্ত হয়েছেন, হাত-পা হারিয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, এমনকি এখনো স্বৈরাচারের যে কোনো দোসরের অত্যাচারে জীবন দিতে প্রস্তুত সেই সব আহত যোদ্ধার প্রতি অনুরোধ করতে চাইÑ আমরা যখন হাসপাতালে তাদের দেখতে গিয়েছি, তাদের রক্তাক্ত স্মৃতিগুলো এখনো রয়েছে। আমরা তাদের বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করতে চাই, আমরা খুব দ্রুতই অনেক কিছু ভুলে যাই। বিগত ১৬ বছর কি হয়েছে এবং শেষ ৩৬ দিনে কি হয়েছে তা শুধু আপনাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। এই ঘটনাগুলো তা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। সারজিস আলম বলেন, আমার দ্বিতীয় অনুরোধ শহীদ হওয়া পরিবারদের প্রতি। কেউ ভাই হারিয়েছেন, কেউ বোন হারিয়েছেন, কেউ সন্তান হারিয়েছেন। আপনারা কিন্তু আপনাদের এই ব্যথা বোঝেন। আপনারা ছাড়া পৃথিবীর কেউ এই ব্যথা বুঝবেন না। কোনো কিছু দিয়ে এই অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। আপনাদের কাছে আমার বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ, আপনাদের এই কথাগুলো, বেদনাগুলো, কষ্টগুলো লিখে দয়া করে আমাদের কাছে পাঠান। শুধু দেশ নয়, পুরো পৃথিবীর কাছে ওই খুনি হাসিনার নির্মম হত্যাকা-গুলো তুলে ধরতে চাই।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডিতে লাইভে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, প্লিজ, আপার অনুসারী যারা আছেন, তারা একটা মিনিটের জন্য হলেও রাস্তায় নামেন। দেখা না হলে তো কথা হবে, তাই না। প্লিজ রাস্তায় নেমে আসেন, আপনাদের সঙ্গে আমরা একটু দেখা করতে চাই, কথা বলতে চাই। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ আপনাদের একটু দেখতে চায়। আপনারা কোথায়? আওয়ামী লীগ নেতাদের বিদেশে বসে না থেকে দেশে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা বলছেন, আপনাদের সঙ্গে নাকি দেশের জনগণ আছে। যদি জনগণ থাকে, তাহলে তাদের নেত্রী বিদেশে কেন পালিয়ে গেল? আপনারা সবাই পালালেন কেন? মূর্খের দল কিছুই বোঝে না। ওদের কোনো আত্মমর্যাদা নেই।
এদিকে একই স্থানে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ফলে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গুলিস্তান, পল্টন এলাকায় যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে গুলিস্তান ও পল্টন এলাকায় চলাচলকারী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে গেছেন অনেকে। অনেকেই আবার রিক্সায় গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
বেলা ২টার দিকে দেখা যায়, পুরো গুলিস্তান এলাকায় যানবাহনে ঠাসা। যান্ত্রিক যান, ব্যক্তিগত গাড়ি, রিক্সা, ঠেলাগাড়ি, ভ্যান গাড়ি, ঘোড়ার গাড়িতে যেন স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা। এমনভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে কোনো গাড়িই নড়াচড়া করতে পারছিল না। ফলে যাত্রীদের অনেককে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে। তবে তীব্র যানজটের ফলে ফুটপাতেও দেখা দেয় জনজট। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এই রুট দিয়ে চলাচলকারী মানুষকে।