সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রবল জনরোষের মুখে ৫ই আগস্ট বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা।তারপর থেকেই সারাদেশের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে জেনারেশন জেন জি।
জেনারেশন জেন জি বা জেনারেশন জেড বলতে আমরা কী বুঝি?মূলত জেনারেশন জেন জি সদস্য তারাই যাদের জন্ম ১৯৯৬ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। বর্তমানে তাদের সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ সদস্যের বয়স ২৮ বছর। এই প্রজন্মকেই সাধারণত জেন জি বলে ধরা হয়।
২০০৯ সালে নির্বাচনে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন জেনারেশন জেড প্রজন্মের সবচেয়ে সিনিয়র সদস্যদের বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর, ফলে এই প্রজন্ম তাদের কৈশোর থেকে যৌবন পর্যন্ত একটি একক দলের শাসনকালে বেড়ে উঠেছে। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সময়কালে আওয়ামী রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনার সাক্ষী এই বিপ্লবী জেন জি জেনারেশন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই রূপকল্প ২০৪১ সহ অনেকগুলো প্রকল্প হাতে নেয়।কিন্তু এসব প্রকল্প কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে তা ছিল শুভঙ্করের ফাঁকি।এরপর শিক্ষাক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতি,যোগ্যতা থাকা স্বত্বেও তরুণদের চাকরি না পাওয়া,দলীয় ুনিষিদ্ধ ছাত্রলীদের লেজুড়বৃত্তি রাজনীতি,শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাশ চাঁদাবাজিসহ ,আলোচিত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ড,বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ড,বিরোধীদলের উপর প্রচুর পরিমাণে দমন নীপিড়ন,অপিরিকিল্পিত উন্নয়ন,হত্যা,ধর্ষণ,বিগত তিন নির্বাচনে ভোটদানে কারচুপিসহ হাজার হাজার অর্থ বিদেশে পাচার সহ এমন কোন ঘৃণিত কাজ নেই যার সাথে আওয়ামী সরকারের সম্পৃক্ততা নেই।এসবই কিন্তু ঘটেছে জেন জি জেনারেশন এর নাকের ডগায়।
সর্বশেষ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়,সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯' এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগ'কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগ' নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে।
সর্বশেষ কোটা নিয়ে দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হাসিনার দেশ ছেড়ে পলায়ন,এসবই বিগত আওয়ামী সরকারের পাপের ফল বলে মনে করছেন,জেনজির সদস্যরা।তাদের বেশিরভাগই মনে করছেন এই আওয়ামী সরকারের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে,তারা ছাত্রদের উপর নির্মম হত্যা চালিয়েছে,যার জন্য তারা আর দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখতে পারে কিনা তা দেশের জনগণ ও আইনই নির্ধারণ করবে।