পটুয়াখালির কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লাগোয়া বেড়িবাঁধের বাইরে ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে বাধা ও হামলার অভিযোগ এনে শতাধিক দখলদারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন।
মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন বাদী হয়ে মহিপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মহিপুর থানার ওসি মোঃ তরিকুল ইসলাম।বুধবারের (৬ নভেম্বর) এ ঘটনায় রাতেই মামলা হয়।বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এর প্রতিবাদে কুয়াকাটায় বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়।
জানা গেছে,সমুদ্র সৈকতের ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন এলাকায় অবৈধভাবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছিল। বুধবার সকালে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম ও উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে এসব অবৈধ স্থাপণা উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। দখলদাররা প্রশাসনের উপর চড়াও হয়। উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবহৃত ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ড্রাইভার কে মারধর করা হয় বলে মামলায় বলা হয়েছে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই সরকারি কাজে বাধা,সম্পদ নষ্ট ও হামলার অভিযোগ এনে ১৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত শতাধিক আসামী করে মহিপুর থানায় একটি মামলা করা হয়।
এ মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবৈধ দখলদাররা। তারা এ মামলার প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিল করে। এ সময় তারা দাবি করেন, তারা এ দেশের নাগরিক হয়েও তাদের কোথাও থাকার জায়গা নেই। দীর্ঘদিন তারা সরকারি জমিতে বসবাস করে আসছেন।এসব জমি পতিত রয়েছে। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযানে নামে উপজেলা প্রশাসন। তারা শুধুমাত্র এর প্রতিবার জানিয়েছেন। কারো উপর হামলা করেননি। তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি যাতে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয় এমন দাবি জানান জেলা প্রশাসনের কাছে।
এ বিষয়ে মহিপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, কুয়াকাটা সৈকত এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানে গেলে দখলদাররা একত্রিত হয়ে লেবারদের ওপর হামলা চালায়। এসময় ভেকু মেশিন ভাংচুর ও চালককে মারধর করা হয়। এতে ভেকু চালক সহ ৩ জন আহত হয়।এছাড়াও অবৈধ দখলদাররা উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে।
সরকারি কাজে বাধা,সরকারি সম্পদ নষ্ট,হামলা ভাংচুর ও মারধরের ঘটনায় তিনি এ মামলা দায়ের করেন।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো:রবিউল ইসলাম বলেন,কুয়াকাটা ট্যুরিজম পার্ক সংলগ্ন অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয়রা সরকারি কাজে বাধা দেয়।লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ভেকু মেশিনের গ্লাস ভেঙে ফেলে ড্রাইভার কে মারধর করা হয়।
তিনি আরো জানান, এর আগে ২০২৩ সালে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলেও পরবর্তীতে তারা আবার এসে সরকারি সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে।এসব অবৈধ দখলদারদের অনেকেরই অন্য স্থানে জমাজমি ও ঘরবাড়ি রয়েছে বলে তার দাবি।
তাবিব
