ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

সমৃদ্ধ গবেষণা কাগজ তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় নির্দেশনা

মো. সোহান হোসেন

প্রকাশিত: ২০:৫১, ৫ নভেম্বর ২০২৪

সমৃদ্ধ গবেষণা কাগজ তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কতিপয় নির্দেশনা

গবেষণা অর্থ নতুন কিছু আবিষ্কার করা

গবেষণা অর্থ নতুন কিছু আবিষ্কার করার জন্য বারবার অনুসন্ধান করা। বিভিন্ন পণ্ডিত বিভিন্ন উপায়ে গবেষণা সংজ্ঞায়িত দিয়েছেন। ক্রেসওয়েল (২০০৮) এর মতে, "গবেষণা হল একটি পদ্ধতিগত তদন্ত যার লক্ষ্য সত্য প্রতিষ্ঠা করা" গবেষণা কাগজ তৈরির বিভিন্ন বিভাগ বা ধাপ রয়েছে যেমন মিকা, সাহিত্য পর্যালোচনা, গবেষণা পদ্ধতি ইত্যাদি। একজন নতুন গবেষক হিসাবে আপনাকে একটি ভাল গবেষণাপত্র লিখতে এই ধাপগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। একটি সাধারণ গবেষণা পেপারের প্রধান ধাপগুলো নিম্নরূপ-

শিরোনাম (Title)- গবেষণার শিরোনামটি স্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট এবং তথ্যপূর্ণ হওয়া উচিত। একজন নতুন গবেষক হিসাবে আপনার গবেষণা বিশেষজ্ঞকে অনুসরন করা উচিত যিনি গবেষণার ক্ষেত্রে আপনার বিষয়ে গবেষণার সাথে জড়িত।

সারাংশ (Abstract)- একে বলা হয় গবেষণার সারসংক্ষেপ। একজন গবেষক হিসেবে আপনাকে অবশ্যই এই ধাপটি বুঝে সম্পূর্ণ করতে হবে। ভালো গবেষণা পেপারের জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনার গবেষণা পত্রের সমস্যা, পদ্ধতি, ফলাফল এবং উপসংহারের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এখানে আপনি ১৫০ থেকে ২৫০ শব্দের মধ্যে লিখতে পারবেন।

মিকা (Introduction)- মিকা একটি গবেষণাপত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একজন নতুন গবেষক হিসেবে আমি মনে করি আপনি মিকা থেকে আপনার গবেষণা শুরু করবেন। মিকা বিভাগে আপনাকে অবশ্যই আপনার গবেষণার বিষয়, পটভমির তথ্য এবং গবেষণা প্রশ্ন বা অনুমান সম্পর্কে আলোচনা করতে হবে। এছাড়াও, আপনাকে অবশ্যই গবেষণার গুরুত্ব বা কেন এই গবেষণার প্রয়োজন তা নিয়ে আলোচনা করতে হবে।

সাহিত্য পর্যালোচনা (Literature review)- এটিও গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। মূলত এখানে পূর্বের গবেষকদের তথ্য পড়ে তাদের গবেষণার মধ্যে যে গ্যাপ রয়েছে তা অনুসন্ধান করতে হবে এবং সেই গ্যাপ দিয়ে নিজের গবেষণা কৌশল সাজাতে হবে।

পদ্ধতি (Methodology)- এটি আপনার গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। গুণগত (qualitative), পরিমাণগত (quantitative), মিশ্র(সরীবফ), অভিজ্ঞতামূলক experimental) ইত্যাদির মতো গবেষণার ধরন সম্পর্কে আপনাকে অবশ্যই ধারণা স্পষ্ট করতে হবে। এছাড়াও আপনি নমুনার আকার, তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি (জরিপ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা), এবং বিশ্লেষণের কৌশলগুলিও এখানে স্পষ্ট করবেন।

ফলাফল (Results)- তথ্য বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে গবেষণার ফলাফলগুলিকে বর্ণনা করা। আপনার গবেষণার মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে হবে যা আপনি আপনার গবেষণা তথ্য বিশ্লেষণ থেকে যা পেয়েছেন। তাছাড়া, আপনি তথ্য উপস্থাপনা (সারণী, চার্ট, গ্রাফ) মাধ্যমে করতে পারেন

আলোচনা (Discussion)- আলোচনা বিভাগটি মূলত ফলাফলের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এবং সেগুলিকে গবেষণা প্রশ্ন বা অনুমানের সাথে সম্পর্কিত করে। আপনি একটি বিশ্লেষণ করতে পারেন যে ফলাফলগুলি পূর্ববর্তী গবেষণাকে সমর্থন করে বা বিরোধিতা করে।

উপসংহার (conclusion)- এটি গবেষণার একটি সংক্ষিপ্ত বিভাগ। মূলত, এই বিভাগটি হলো গবেষণা করে আপনি যা পেয়েছেন তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা।

তথ্যসূত্র/বিবলিওগ্রাফি (Reference/ Bibliography)- এই বিভাগে উদ্দেশ্য হচ্ছে আপনার গবেষণাপত্রে যে বই, নিবন্ধ, ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে সংযুক্ত করেছেন তার তালিকাভুক্ত করা একটি শক্তিশালী গবেষণা পত্রের জন্য আপনার অবশ্যই মূল্যবান তথ্যের প্রয়োজন হবে। একজন গবেষক হিসেবে আপনাকে আপনার বিশেষজ্ঞ গবেষকদের অনুসরণ করা উচিত যারা গবেষণায় জড়িত। একটি শক্তিশালী গবেষণাপত্র লেখার জন্য, আপনার প্রকাশিত গবেষণাপত্র থেকে তথ্য নেওয়া উচিত। আপনি যদি তথ্য গ্রহণ করেন তখন আপনাকে গবেষণার জন্য সম্মানের জন্য তাদের উদ্ধৃত (ঈরঃধঃরড়হ) করতে হবে। আপনি এপিএ, এমএলএ, শিকাগো, ইত্যাদির মতো বিভিন্ন মডেল দ্বারা তাদের উদ্ধৃত করতে পারেন।

একজন নতুন গবেষক হিসেবে প্রথমে আপনার হাইপোথিসিস তৈরির জন্য অনেক গবেষণা পুস্তক পড়া উচিত। আপনি যখন অনেক কাগজপত্র পড়বেন তখন আপনি নতুন গবেষণা লেখার জন্য বিভিন্ন ধারণা পাবেন। সুতরাং, প্রথমে আপনার রিসার্চগেট, রিসার্চমেট, গুগল স্কলারে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করা উচিত এবং আপনার গবেষণার ক্ষেত্র নির্বাচন করা উচিত। তারপর যারা গবেষণার সাথে জড়িত তাদের সন্ধান করুন। তারপর আপনার গবেষণা সম্পর্কে তাদের সাথে পরামর্শ করে তারপরে আপনার গবেষণা শুরু করুন।

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

×