ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা বহাল:নেপথ্যের কাহিনী

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ৫ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৪:২৬, ৫ নভেম্বর ২০২৪

মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা বহাল:নেপথ্যের কাহিনী

কোটা সংস্কার ঘিরেই শুরু হয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।জুলাইতে শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান-নাতি-নাতনিদের জন্য বরাদ্দ করা ৩০ শতাংশ কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন।

 

 

 

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তিতে কোটা বহাল রেখেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গত ৩১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

এদিকে আন্দোলনের উৎপত্তিস্থল ঢাবিতে পুনরায় আবার কোটা সিস্টেম ফিরে আসায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

ঢাবির ভর্তি আবেদন প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনের পঞ্চম ধাপে আবেদনকারী পরবর্তী পাতায় প্রদর্শিত ছবি-৫ এ অনুরূপ ফরমে তার পরীক্ষা কেন্দ্রের বিভাগীয় শহর বেছে নেবে এবং শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কোটার তথ্য জানাবে। আবেদনকারী শিক্ষার্থী যদি কোটার জন্য নির্ধারিত আসনে আবেদন করতে চায় তবে প্রযোজ্য কোটার ঘরে ক্লিক করে নিচের কাজ করবে এক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান/মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটার ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা সনদ নম্বর দেবে ও মুক্তিযোদ্ধা সনদ আপলোড করবে।

অন্যদিকে মেধা তালিকায় স্থান পাওয়ার পরের ধাপের বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঙ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান (সন্তান না থাকলে নাতি/নাতনি) কোটার ক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যু করা সনদপত্র অথবা ১৯৯৭ সন থেকে ২০০১ সন পর্যন্ত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অধীনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্রসহ আবেদন করতে হবে।

উল্লেখ্য, ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৫ শতাংশ, ওয়ার্ড/পৌষ্য কোটায় ১ শতাংশ, উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায়, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটায় ১ শতাংশ, প্রতিবন্ধী (দৃষ্টি, বাক, শ্রবণ, শারীরিক, নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার্স/হিজড়া) কোটায় ১ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হত। এর পাশাপাশি গত বছর খেলোয়াড় কোটায় ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি নেয় বিশ্ববিদ্যালয়। এবারো থাকছে খেলোয়াড় কোটা।

ঢাবি অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটা নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে জোরেশোরেই আলোচনা হয়েছে। সেদিনই একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছিল। যেহেতু সময়ের স্বল্পতা ছিল এ বছর, তাই আগে করা হয়নি। তবে এটা আগামী মিটিংয়ের পরে রিভিউ হতে পারে। উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, এটা একাডেমিক বিষয়, তাই এই বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ভালো বলতে পারবেন।

কোটা বিষয়টি সামনে এনে উপাচার্য বরাবর লিখিত আবেদনও করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এবিএম শহিদুল ইসলাম।২৭ অক্টোবর কোটা সংস্কার করতে কমিটি করলেও এই কমিটির সদস্যরা লিখিত বিজ্ঞপ্তি পাননি।তিনি বলেন, আমাকে সদস্য করা হলেও আমি  (সোমবার) সেটা জানতে পারি। ফলে কমিটির কোনো বৈঠক ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটা রেখে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম আরও বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষে না। সেজন্য তাদের ভাতা দেওয়া হয়েছে। সন্তানদের চাকরির কোটা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাই বলে নাতি-নাতনিদের কোটা দিতে হবে? একজন গ্রামের ছেলে চান্স পাচ্ছে না তাদের কোটার জন্য। তাই এই কোটা অবশ্যই বাতিল করা জরুরি। না হলে আবু সাঈদসহ হাজারো ছাত্র-জনতার রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করা হবে।

ফুয়াদ

×