.
সংস্কার নিয়ে দেশে এখন তোড়জোর চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সংস্কার চায়। তাই অন্তর্বর্তী সরকারও সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। বিএনপিও সমমনা দলগুলোকে নিয়ে সংস্কারের পক্ষে কাজ করছে। এ জন্য অনেক আগেই তারা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছে। তবে বিএনপি চায় নির্বাচনী সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্য সংস্কারগুলো ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের পরে করতে। এ বিষয়ে জনমত বৃদ্ধি করতে তারা সারাদেশে গণসংযোগ কর্মসূচি জোরদার করছে।
এক বছরের বেশি সময় আগে থেকেই রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলে আসছে বিএনপি। এ জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্র গঠনে সংবিধান সংস্কারসহ ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল দলটি। তবে ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচন বর্জন করে রাজপথে আন্দোলনে সক্রিয় থাকে দলটি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের পর ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার শুরু থেকেই সংস্কারের ওপর জোর দেয়। সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ৬টি কমিটি করে দিয়েছে সরকার। কমিটিগুলো ডিসেম্বরের মধ্যেই সরকারের কাছে রিপোর্ট পেশ করবে।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার চায় সংস্কারের কাজ শেষে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে। আর বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো চায় নির্বাচনী সংস্কারের পর সরকার যেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করে। আর ওই নির্বাচনে বিজয়ী সরকার জনপ্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্য সংস্কার কাজ সম্পন্ন করবে। এ পরিস্থিতিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির দেওয়া সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জনমত বৃদ্ধি করতে সারাদেশে গণসংযোগ জোরদার করতে সাংগঠনিক সফর শুরু করছেন দলের সিনিয়র নেতারা। তারা দেশের সকল মহানগর, জেলা এমনকি উপজেলা পর্যন্ত সভা-সমাবেশ করার পাশাপাশি বিভিন্নভাবে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করছেন।
সমমনা দল ও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন মহলের মতামত নিয়ে বিএনপি এক বছরের বেশি সময় আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল। এই সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহল ইতিবাচক মন্তব্য করলেও বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় এ বিষয়টি তখন কার্যত ঢাকা পড়ে যায়। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ করার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসে। এ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেই বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার কাজ শুরু করে। সরকারের পাশাপাশি বিএনপিও আবার নতুন উদ্যমে সংস্কারের পক্ষে জনমত বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই এ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে দেশের সর্বমহলে আলোচনা চলছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্ররাও সংস্কারের কথা বলছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও সংস্কারের কথা বলছেন। আবার বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোও সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। বিএনপি তাদের দেওয়া ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব সম্পর্কে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষকে সোচ্চার করতে বিভিন্ন কর্মকৌশল গ্রহণ করেছে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের ৩ দিন পর ৮ আগস্ট প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। এর পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টাসহ সরকারের সকল উপদেষ্টা রাষ্ট্র সংস্কারের ওপর জোর দেন। কোনো কোনো উপদেষ্টা বলেন, সংস্কারের জন্য যতদিন দরকার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ততদিন ক্ষমতায় থাকবে। এ পরিস্থিতিতে বিএনপি নির্বাচনী সংস্কার শেষে যতদ্রুত সম্ভব জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করে। আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এবার যদি সংস্কারের কাজ শেষ না করা যায় তাহলে তা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই সংস্কারে জন্য যতদিন সময় লাগে তারা ততদিনই ক্ষমতায় থাকবেন। সংস্কার শেষ করার পর তারা জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে কিছুটা সময় বেশি লাগলেও বিএনপি এ বিষয়ে তেমন আপত্তি করবে না।
উল্লেখ্য, এক বছরের বেশি সময় আগে বিএনপি যে সংস্কার প্রস্তাব দেয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন, সংবিধান সংশোধন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য, দুই মেয়াদের বেশি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী না থাকা ও ন্যায়পাল নিয়োগ ইত্যাদি। এই সংস্কার প্রস্তাবের পক্ষে জনমত তৈরির জন্য আগে থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে আসছে দলটি। এ বিষয়ে জনমত বৃদ্ধি করতে গণসংযোগ কর্মসূচি ক্রমেই জোরদার করা হচ্ছে।
বিএনপির দেওয়া ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ১. একটি সংবিধান সংস্কার কমিশন গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার গৃহিত সব অযৌক্তিক, বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংশোধনী ও পরিবর্তনসমূহ রহিত/সংশোধন করা। ২. প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘রেইনবো ন্যাশন’ প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য একটি ন্যাশনাল রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠন করা। ৩. একটি নির্বাচনকালীন দল নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। ৪. রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা। ৫. পরপর দুই টার্মের অতিরিক্ত কেউ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।
৬. বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা প্রবর্তন করা। ৭. সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মতামত প্রদানের সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা। ৮. বর্তমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োাগ আইন- ২০২২’ সংশোধন করা। ৯. সকল রাষ্ট্রীয়, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন করা। শুনানির মাধ্যমে সংসদীয় কমিটির ভেটিং সাপেক্ষে এই সকল প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক ও গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগ প্রদান করা। ১০. বিচার বিভাগের কার্যকর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি জুডিসিয়াল কমিশন গঠন করা। ১১. একটি প্রশাসনিক সংস্কার কমিশন গঠন করে প্রশাসন পুনর্গঠন করা। ১২. মিডিয়ার সার্বিক সংস্কারের লক্ষ্যে একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা।
১৩. দুর্নীতির ক্ষেত্রে কোনো আপোস করা হবে না। অর্থপাচার ও দুর্নীতির অনুসন্ধান করে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা। সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ করা। ১৪. সর্বস্তরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। ‘ইউনিভার্সাল হিউম্যান রাইটস চার্টার’ অনুযায়ী মানবাধিকার বাস্তবায়ন করা। ১৫. বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি অর্থনৈতিক সংস্কার কমিশন গঠন করা। ১৬. ‘ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার’ এই মূলনীতির ভিত্তিতে প্রত্যেক ধর্মাবলম্বী নিজ নিজ ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার ভোগ করবেন। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, উপাসনালয় ভাঙচুর এবং তাদের সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ১৭. মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা। নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করা। পাটকল, বস্ত্রকল, চিনিকলসহ সব বন্ধ শিল্প পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া। প্রবাসী শ্রমিকদের জীবন, মর্যাদা ও কর্মের নিরাপত্তা এবং দেশে বিমানবন্দরসহ সব ক্ষেত্রে হয়রানিমুক্ত সেবা প্রাপ্তি ও ভোটাধিকার নিশ্চিতের ব্যবস্থা করা। ১৮. বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ খাতে দায়মুক্তি আইনসহ সকল কালাকানুন বাতিল করা।
১৯. বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া। বাংলাদেশের ভূখ-ের মধ্যে কোনো প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতা বরদাশত করা হবে না এবং কোনো সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা আশ্রয়প্রশ্রয় পাবে না। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদকে রাজনৈতিক ঢাল বা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এবং সন্ত্রাসবাদের তকমা লাগিয়ে ভিন্নমতের বিরোধী শক্তি এবং রাজনৈতিক বিরোধী দল দমনের অপতৎপরতা বন্ধ করা হলে প্রকৃত সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে এবং আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা সম্ভব হবে।
২০. দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জীবিত করে গড়ে তোলা। ২১. ক্ষমতার ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিকতর স্বাধীন, শক্তিশালী ও ক্ষমতাবান করা। ২২. রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা এবং তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও স্বীকৃতি প্রদান করা। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে যার যার অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের ব্যবস্থা করা। ২৩. যুবসমাজের ভিশন, চিন্তা ও আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে আধুনিক ও যুগোপযোগী যুব-উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ণ করা। এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত, যেটাই আগে হবে, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করা। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি বিবেচনা করা।
২৪. নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করা। জাতীয় সংসদে মনোনয়নের ক্ষেত্রে নীতিগতভাবে নারীদের প্রাধান্য দেওয়া। ২৫. চাহিদাভিত্তিক ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া। ২৬. সবার জন্য স্বাস্থ্য এই নীতির ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের ‘এনএইচএস’ এর আদলে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা প্রবর্তন করা। সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড চালু করা। ২৭. কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। পর্যায়ক্রমে সব ইউনিয়নে কৃষিপণ্যের জন্য সরকারি ক্রয়কেন্দ্র স্থাপন এবং কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন এবং গবেষণার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট রপ্তানিমুখী কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প খাতকে প্রণোদনা দেওয়া।
২৮. দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে সড়ক, রেল ও নৌপথের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে সারাদেশে সমন্বিত বহুমাত্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। দেশের সমুদ্রবন্দর ও নৌবন্দরসমূহের আধুনিকায়ন, উন্নয়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা। ২৯. জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সংকট ও ক্ষতি মোকাবিলায় টেকসই ও কার্যকর কর্মকৌশল গ্রহণ করা। বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাধুনিক ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। নদী ও জলাশয় দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এবং বন্যা ও খরা প্রতিরোধে খাল ও নদী খনন ও পুনর্খনন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা। সামুদ্রিক সম্পদের বিজ্ঞানসম্মত জরিপ ও মজুতের ভিত্তিতে তা আহরণ এবং অর্থনৈতিক ব্যবহারের ব্যবস্থা নেওয়া।
৩০. তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতকে বৈশ্বিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সর্বক্ষেত্রে এর প্রয়োগকে প্রাধান্য দেওয়া। মহাকাশ গবেষণা এবং আণবিক শক্তি কমিশনের কার্যক্রমের প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক সুযোগ সমৃদ্ধ করা। এবং ৩১ নম্বর দফায় রয়েছে- জাতীয় মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে শহরে ও গ্রামে কৃষিজমি নষ্ট না করে এবং নগরে জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপ হ্রাস করে পরিকল্পিত আবাসন ও নগরায়ণের নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা। পর্যায়ক্রমে দেশের সব দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন নিশ্চিত করা।
বিএনপির সিনিয়র নেতারা বারবার দেশবাসীকে উদ্দেশ করে বলছেন, তাদের দল ক্ষমতায় গেলে এই ৩১ দফা সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। তাই ৩১ দফা প্রস্তাব দেওয়ার আগেই সমমনা সব রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক এবং অংশীজনের সঙ্গে আলাপ করে প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করেছে।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বর্তমানে দেশের যে অবস্থা এ অবস্থার উত্তরণে রাষ্ট্র সংস্কার অতীব গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। প্রস্তাবগুলো আমরা দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে তুলে ধরছি। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য এই ৩১ দফা প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে।