এমন এক প্রযুক্তির বাসস্থানের উদ্ভাবন করেছেন যেটা বন্যার পানিতেও ভেসে থাকবে
প্রতিবছর বন্যায় বাংলাদেশের ক্ষতির পরিমান প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার, এছাড়াও লাখ মানুষের ঘড়-বাড়ি বন্যায় ভেসে যায়। এবার এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এলো আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের একটি দল। দলটি এমন এক প্রযুক্তির বাসস্থানের উদ্ভাবন করেছেন যেটা বন্যার পানিতেও ভেসে থাকবে। বিস্তারিত থাকছে প্রতিবেদনে
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বন্যার প্রভাব তীব্র আকারে বেড়েছে। এতোদিন ধরে বন্যাপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে দেশের উত্তর-পুর্বাঞ্চলকে বিবেচনা করা হলেও গ্রান্থাম রিসার্চ ইনস্টিটিউট অন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্ট এবং সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ ইকোনমিক্স প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বন্যায় প্রতি বছর বাংলাদেশের প্রায় ৫৫-৬০ শতাংশ প্লাবিত হয়। এবং ক্ষতির হিসাবে ১ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয় বাংলাদেশের ।
খুব সম্প্রতি দেশের কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, বান্দরবান, ও চট্টগ্রাম জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। যে বন্যায় ভেসে গেছে লাখো মানুষের ঘর বাড়ি। এবার বন্যায় লাখো মানুষের দুর্ভোগের মধ্যেই এল সুখবর।
বন্যা হলেও পানিতে ভেসে থাকবে এমন মডেলের ঘর তৈরি করেছে আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের একটি গবেষক দল।
‘বন্যায় ভাসমান এই বাসস্থান’ প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তরী’। এই ঘরগুলো বন্যার পানিতে ভেসে থাকবে, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আবার আগের অবস্থানে ফিরে যাবে।
প্রস্তাবিত এই বাসস্থানে রয়েছে একটি বসতঘর, একটি রান্নাঘর, একটি শৌচাগার ও একটি বারান্দা। এই ঘরগুলোর নির্মাণ খরচও সাধারণ ঘরের মতোই জনসাধারণের নাগালের মধ্যেই।
বাসস্থান তৈরিতে ব্যবহার করা উপকরণ হবে অগ্নি প্রতিরোধী, পরিবেশ বান্ধব। ঘুনে পোকায় আক্রান্ত হবে না এই ঘর। একই সাথে প্রতিটি বাসগৃহ কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ বছর টিকে থাকবে।
এছাড়াও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ খুবই কম এবং খুবই সহজ, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কাউকেই সহজেই প্রশিক্ষিত করে বাসগৃহ হস্তান্তর করা সম্ভব। একটি বাসগৃহ দুই থেকে তিন দিনের মধ্যেই নির্মার্ণ করা সম্ভব এবং চাইলে সহজেই স্থানান্তর করা যাবে।
এরই মাঝে পরীক্ষামূলক মডেলটির সব ধরনের টেকনিক্যাল পরীক্ষা–নিরীক্ষা ল্যাবরেটরিতে সম্পন্ন হয়েছে। গবেষক দলের শিক্ষার্থীরা আশা করছেন আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রথম ঘরটি বন্যা কবলিত এলাকায় পুনর্বাসনের জন্য হস্তান্তর করতে পারবে।
গবেষক দল আশা করছে, সরকারি সহযোগীতা পেলে কিংবা উৎপাদনে কোনও শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসলে ভাসমান বাসগৃহটি স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি করে আরও কম খরচে নির্মাণ করা সম্ভব।
বারাত