অস্ত্র
লাইসেন্স করা যেসব আগ্নেয়াস্ত্র সরকার জমা নিয়েছিল সেগুলো ফেরত দিতে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে কমিটিতে দুইজন সদস্য এবং একজন সদস্য সচিব রাখা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব ইসরাত জাহান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এতে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের ২৫ আগস্ট তারিখের এক প্রজ্ঞাপনে বিগত ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি হতে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য গৃহীত এবং ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে থানায় জমা দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ফেরত দেওয়ার আবেদন যাচাই-বাছাই পূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিমিত্ত জেলা পর্যায়ে নিম্নরূপ কমিটি গঠন করা হলো:
কমিটিতে যারা আছেন আহ্বায়ক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট(ডিসি) ও সদস্য জেলা পুলিশ সুপার, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) উপপরিচালক এবং সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট
কমিটির কার্যপরিধি কমিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের ২৫ আগস্ট তারিখের প্রজ্ঞাপনমূলে জমাদানকৃত বৈধ অস্ত্র লাইসেন্সধারীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেরত প্রদানের নিমিত্ত যাচাই- বাছাই অন্তে ফেরত প্রদান করবে।
বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ইস্যুকৃত এবং যে সকল অস্ত্র ফেরত প্রদান করলে তা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে ব্যবহৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হবে সে সকল অস্ত্র ফেরত প্রদানের বিষয় বিবেচিত হবে না।
যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধে মামলা চলমান আছে বা যারা ফৌজদারি অপরাধে ইতোমধ্যে দণ্ডিত হয়েছে তাদের অস্ত্র ফেরত প্রদানের বিষয়টিও বিবেচনা করা যাবে না।
কমিটি প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত নির্ধারিত তারিখের পরে জমাকৃত অস্ত্রের বিষয়ে যৌক্তিকতা পর্যালোচনাপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
কমিটি প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনানুযায়ী ইতোমধ্যে বাতিলকৃত অস্ত্রের পুনর্বহালের আবেদনের যৌক্তিকতা পর্যালোচনাপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সুপারিশ প্রণয়ণপূর্বক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে প্রেরণ করবে।
কমিটি প্রতিটি আবেদনের যৌক্তিকতা পৃথক পৃথকভাবে বিশ্লেষণপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। কমিটি গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের প্রতিবেদন প্রতিমাসের প্রথম সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে প্রেরণ করবে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানি ঘটে। শেষ তিন দিন (শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা ছাড়ার আগে-পরে) থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম লুট হয়।
এমন পরিস্থিতিতে গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়।
নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্ধারিত স্থানে আগ্নেয়াস্ত্র জমা না করলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য হবে। তাছাড়াও কোনো ব্যক্তির কাছে পুলিশের লুণ্ঠিত অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষিত থাকলে ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানায় জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেশে এখন বৈধ অস্ত্রের সংখ্যা কমবেশি ৫০ হাজার। এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি অস্ত্র রয়েছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হাতে। তাদের বেশির ভাগই আবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
শিহাব উদ্দিন