সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোন অবস্থায় দখলদারিত্বের স্থান দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ।
তিনি বলেন, আমরা সিটি কর্পোরেশনগুলোর প্রতি নির্দেশনা দিয়েছি, বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে এমন কোন্দল, দখলদারিত্ব দূর করতে আমরা শক্ত অবস্থানে যাব। প্রয়োজন হলে এ সমস্যা সমাধানে আমরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শরণাপন্ন হবো। তবুও কোনোভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে, বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ে এলাকাভিত্তিক দখলদারিত্বের স্থান দেওয়া যাবে না।
উপদেষ্টা আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের মিলনায়তনে ঢাকা দক্ষিণ, ঢাকা উত্তর, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিক সেবা যথাযথভাবে নিশ্চিতকল্পে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় রাস্তাঘাট মেরামত ও উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মশক নিধন কার্যক্রমসহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদেয় সেবা প্রদান সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় সুইপার কলোনিতে হরিজন সম্প্রদায়ের ৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং মিরনজিল্লা সুইপার কলোনিতে ৫ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর অনুকূলে বাসা বরাদ্দ দেওয়া হয়।
এ সময় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, এলাকাভিত্তিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় নানা রকম সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে দখলদারিত্বের চেষ্টা চলছে। যার ফলে, ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বর্জ্য সংগ্রহ নিয়ন্ত্রণ অনেকটা চর দখলের মত অবস্থা হয়ে গেছে। এলাকাভিত্তিক বর্জ্য সংগ্রহ কারা করবে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দল চলছে।
উপদেষ্টা জানান, রাস্তার পাশের ফুটপাতগুলো মেরামত জরুরি। আমাদের ঢাকা শহরে ব্লক বা টাইলস দিয়ে ফুটপাত তৈরি করা হয়। কিছু দিন পরে সেই টাইলসের নিচের মাটি বা বালু সরে যায়। তখন সেই ফুটপাতের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে আর চলাচল করা যায় না। দিনের পর ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় থাকে, ফলে পথচারীদের চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, ঢাকায় আরেকভাবে ফুটপাত করা হয় তা ঢালাইয়ের মাধ্যমে। মাঝে মাঝে ইউলিটি সার্ভিস প্রদানের জন্য এসব ফুটপাত আবার খুঁড়ে ফেলতে হয়। এর ফলে সিটি কর্পোরেশন বা সরকারের নতুন করে ফুটপাত সংস্কারের বরাদ্দ দিতে হয়। এই কারণে সরকারের টাকা অপচয় হচ্ছে। এজন্য ফুটপাত সংস্কারে সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশলীরা নতুন কিছু চিন্তা করেন। যা দিয়ে এসব সমস্যার সমাধান করা যায় এবং উন্নয়নটা যেন দীর্ঘমেয়াদি হয়।
উপদেষ্টা বলেন, শীঘ্রই ১২টি সিটি কর্পোরেশনে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হবে। এ ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের বিশাল কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশাসক নিয়োগ প্রদান করা হবে। শুরুতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনে পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক নিয়োগের কাজ সম্পন্ন হবে।
এর আগে বৈঠকে এই চার সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন বিষয়ে তাদের কাজ করার নানান চ্যালেঞ্জ, সমস্যা, কর্মপদ্ধতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।অনুষ্ঠানে ডিএসসিসির প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এছাড়াও ডিএনসিসির প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান, নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের (নাসিক) প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) প্রশাসক শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মিজানুর রহমান, ডিএনসিসির সিইও মীর খায়রুল আলম, নাসিক ও গাসিক প্রতিনিধিবর্গ বক্তব্য রাখেন।
এসআর